ঢাকা, ২৬ আষাঢ় ( ১০ জুলাই) :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষ্যে
নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২১ পালন
করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘Rights and Choices are the Answer:
Whether baby boom or bust, the solution lies in prioritizing the reproductive health and rights of all
people’ ‘অধিকার ও পছন্দই মূল কথা : প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার প্রাধান্য পেলে কাঙ্ক্ষিত
জন্মহারে সমাধান মেলে’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। 
একটি দেশের জনসংখ্যা ও উন্নয়ন অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত। দেশের আয়তনের তুলনায়
জনসংখ্যা বেশি হলে প্রতিটি সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে। তাই একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম
পূর্বশর্ত হচ্ছে পরিকল্পিত জনসংখ্যা। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য
মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে পরিকল্পিত জনসংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে। 
আমরা জনসংখ্যা বিষয়ক বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি
বাস্তবায়ন করছি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা, পরিকল্পিত পরিবার গঠন, মা ও
শিশু স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, স্বাভাবিক প্রসব সংক্রান্ত সকল সেবা,
বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যসেবা এবং আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহীতার হার বৃদ্ধিকে
যথেষ্ট অগ্রাধিকার দিয়েছি। নিরাপদ মাতৃত্ব, কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, নারী শিক্ষা ও নারী
কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের
মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা

হয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মীগণ প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার স্যাটেলাইট
ক্লিনিক এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে দম্পতি পরিদর্শনের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা এবং মা ও শিশু
স্বাস্থ্যসেবা এবং পরামর্শ দিচ্ছেন। ফলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস পেয়েছে এবং এই সাফল্যের
স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা এমডিজি অ্যাওয়ার্ড-২০১০ অর্জন করেছি। 
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস অতিমারি মোকাবিলা করে স্বাস্থ্যবিধি
মেনে আমাদের জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এ সময় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। অতিমারির সময়
জন্মহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের জনসংখ্যা সীমিত রাখতে হলে এ সময় পরিবার
পরিকল্পনা সামগ্রী সরবরাহ যাতে সঠিক মাত্রায় থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। 
করোনাভাইরাস অতিমারিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের
ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন
অভীষ্ট-২০৩০-এর লক্ষ্যসমূহ অর্জন করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ সৃষ্টিই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য
অর্জনে সুস্থ-সবল জাতি গঠনের জন্য পরিবার পরিকল্পনা এবং মা ও শিশুর প্রজনন-বয়ঃসন্ধি
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ের সেবা অবকাঠামোসমূহের সর্বোত্তম ব্যবহার
নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি সহযোগী সংগঠন, সুশীল সমাজ,
গণমাধ্যম, সচেতন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। 
আমি বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২১ উদযাপনে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য
কামনা করছি। 

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”