ইরানের পার্লামেন্টে অর্থমন্ত্রী আবদুল নাসের হিম্মতিকে ভোটের মাধ্যমে বরখাস্ত করা হয়েছে। বর্ধিত মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার দরপতনের অভিযোগে অভিশংসনের পর তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রবিবার জানিয়েছে।
এদিন পার্লামেন্টে উপস্থিত ২৭৩ জন সদস্যের মধ্যে ১৮২ জনই অর্থমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন। গত বছরের মাঝামাঝির তুলনায় বর্তমানে সে দেশের মুদ্রার দরপতন হয়েছে অন্তত দেড় গুণ।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান অর্থমন্ত্রী নাসেরের পক্ষ নিয়ে সংসদ সদস্যদের বলেছিলেন, ‘আমরা শত্রুর সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় (অর্থনৈতিক) যুদ্ধের মধ্যে আছি। আমাদের যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনা করা দরকার। এখনকার সমাজের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় নয় এবং আমরা একজন ব্যক্তির ওপর সব দোষ চাপিয়ে দিতে পারি না।’
তবে ইরানের সংসদ সদস্যরা হিম্মতির নিন্দা করেছেন এবং ইরানের অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্য তাকেই দায়ী বলে মনে করেন।
সংসদ সদস্য রুহুল্লাহ মুতাফাক্কার বলেন, মানুষ মুদ্রাস্ফীতির নতুন ঢেউ সহ্য করতে পারছে না। বৈদেশিক মুদা ও অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আরেক সংসদ সদস্য ফাতেমা মুহাম্মদ বেগী বলেন, মানুষজন ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে পারছে না।
অন্যদিকে নিজের আত্মপক্ষ সমর্থন করে হিম্মতি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাস্তব হার নয়; এটি মুদ্রাস্ফীতির প্রত্যাশার কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সমস্যা মুদ্রাস্ফীতি এবং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সংকট, যা বছরের পর বছর ধরে আমাদের অর্থনীতিকে জর্জরিত করেছে।’
পেজেশকিয়ান গত বছরের জুলাইয়ে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা অবসানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। তবে ইরানের মুদ্রার মান ক্রমবর্ধমান হারে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে গত ডিসেম্বরে ইরানের মিত্র বাশার আল-আসাদের পতনের পর মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
২০১৮ সালে ওয়াশিংটন ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়, যার পর থেকে দুই অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলেছে।
সূত্র : এএফপি