০৮ জুলাই ২০২৩

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে তার থেকে বেশি। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে কমেছে বাজার মূলধন।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২১ শতাংশের ওপরে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে দশমিক ২৫ শতাংশ। আর বাজার মূলধন কমেছে প্রায় দু’শ কোটি টাকা।

দাম বাড়ার তালিকা বড় হলেও গত কয়েক মাসের মতো তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল চলতি অর্থবছরের প্রথম সপ্তাহজুড়েও। ফলে প্রায় দু’শ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

এমন বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৯৮ কোটি টাকা বা দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে।

এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯০টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩টির। আর ১৮৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৯ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ।

প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৩ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ।

ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৫ শতাংশ।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭১৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৯১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১২৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বা ২১ দশমিক ২০ শতাংশ।

আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৯৫৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৬২৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা বা ২১ দশমিক ২০ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩১ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৯ কোটি ৬১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। ৯৮ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেএমআই হসপিটাল, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, অলেম্পিক এক্সসরিজ, ফু-ওয়াং সিরামিক এবং আলিফ মেনুফ্যাকচারিং।