২৫ জুলাই ২০২৩

ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর ‘বিতর্কিত’ বিলটি সংসদে পাস হয়েছে। এমনকি, প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সোমবার (২৪) দেশটির ক্ষমতাসীন কট্টর ডানপন্থী সরকার নেসেটে বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমানোর বিলটি পাস করে।

ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিরোধী আইন প্রণেতাদের বয়কটের পরও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার জোটের মিত্ররা নেসেটে বিলটি পাস করেছে। এ সময় বিরোধীরা নেসেটে ‘লজ্জা, লজ্জা’ বলে চিৎকার করেন। ১২০ আসনের নেসেটে বিলটি ৬৪ ভোট পেয়ে পাস হয়।

সমালোচকরা বলছেন, বিচার বিভাগের এ পরিবর্তনের ফলে ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বাতিল করতে পারবেন না আদালত। এমনকি, প্রধানমন্ত্রীর কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগও থাকবে না। বিচারকরা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলেও পার্লামেন্টে তা পরিবর্তন করা যাবে। এতে করে আরও কর্তৃত্ববাদী হবে সরকার।

তবে নেতানিয়াহুর দাবি, নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের ক্ষমতার ভারসাম্য নেই। তাই ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিতে এ পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল।

এদিকে, বিলটি পাস হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন হিস্তাদ্রুত। বিলটি নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরনন বার-ডেভিড বলেন, ‘সরকারকে একতরফা এ সংস্কারের গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। প্রয়োজনে আমি ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের প্রধানদের নিয়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেবো।

এদিকে, যখন নেসেটে বিলটি নিয়ে ভোটাভুটি হচ্ছিল ঠিক তখন পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করছিল দেশটির জনগণ। ড্রাম ও বাঁশি বাজিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলছিল, লজ্জা, লজ্জা। বিক্ষোভকারীদের সরাতে জলকামানের ব্যবহার করে পুলিশ।

সোমবার বিলটির ওপর ভোটাভুটি ভোট স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছিলেন, বিচার বিভাগের সংস্কারের প্রস্তাবটি আরও বিভাজনমূলক হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে। বিলটি পাসের জন্য তাড়াহুড়ো করার কোনো মানে হয় না। ইসরায়েলি নেতাদের উচিত, জনগণের দাবিকে প্রাধান্য দেওয়া ও একমত্য প্রতিষ্ঠা করা।

বিচার বিভাগের পরিবর্তনের জেরে ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বিক্ষোভ শুরু হয়। চলতি বছরের শুরুতে নতুন জোট সরকার বিচার বিভাগের পরিবর্তনের বিষয়টি সামনে আনে। এরপর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। এমনকি, বিলটি পাস হওয়ার পরও বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।