ঢাকা, ২২ আষাঢ় (৬ জুলাই) :
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ডিজিটাল ব্যবসায় শুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য “ডিজিটাল
কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১” প্রণয়ন করা হয়েছে। গত ৪ জুলাই তা সরকারের গেজেট
আকারে প্রকাশত হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি
ও বেসরকারি সংস্থা ও অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে এ ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা
তৈরি করা হয়েছে। এতে মার্কেটপ্লেসে বিক্রয়যোগ্য পণ্য ও সেবার তথ্য প্রদর্শন ও ক্রয়-
বিক্রয়, সাধারণ নিয়মাবলি, মার্কেটপ্লেসে পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন, পণ্য
ডেলিভারি, অগ্রীম পরিশোধিত মূল্য সমন্বয় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, যা
গ্রাহকদের জন্য সহায়ক হবে। মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল কমার্সের আওতায় নেশা সামগ্রী,
বিস্ফোরক দ্রব্য বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ সামগ্রী বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। জুয়া বা
অনলাইন বিটিং বা অনলাইন গেমবলিং এর আয়োজন বা অংশগ্রহণ করা যাবে না। ডিজিটাল কমার্স
প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোনো ধরনের লটারি’র আয়োজন করতে পারবে
না। মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা নেটওয়ার্ক ব্যবসায় পরিচালনা করা যাবে না।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে
ভার্চুয়ালি “ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১” জারির বিষয়ে অবহিতকরণ সংক্রান্ত
সভায় সভাপতিত্ব করে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পণ্য বিক্রেতা বা তার সাথে চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে
না থাকলে “স্টকে নেই” কথাটি স্পষ্টভাবে পণ্যের পাশে লিপিবদ্ধ করেতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয়
পণ্য ও খাদ্যসামগ্রীর বা সংখ্যায় প্রকাশ করা যায় না এমন পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে স্টকের
পরিমাণের পরিবর্তে “এভেইলেবল ফর ডেলিভারি” কাথাটি লেখা থাকতে হবে। অগ্রীম মূল্য
আদায়ের ক্ষেত্রে প্রদর্শিত পণ্য অবশ্যই দেশের ভেতরে ‘রেডি টু শিপ’ পর্যায়ে থাকতে হবে।
সম্পূর্ণ মূল্য গ্রহণের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি পারসন বা প্রতিষ্ঠানের নিকট
হস্তান্তর করার মত অবস্থায় নেই এমন পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যমূল্যের ১০% এর বেশি অগ্রীম
গ্রহণ করা যাবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত নীতিমালার মাধ্যমে ১০০% পর্যন্ত অগ্রীম
গ্রহণ করা যাবে। বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শিত পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে পণ্য ডেলিভারিম্যান বা ডেলিভারি সংস্থার নিকট হস্তান্তর করতে হবে এবং ক্রেতাকে তা
টেলিফোন, ই-মেইল বা এসএমএস এর মাধ্যমে জানাতে হবে।
টিপু মুনশি বলেন, পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করা হয়ে থাকলে ক্রেতা ও বিক্রেতা একই
শহরে অবস্থান করলে ক্রয়াদেশ গ্রহণের পরবর্তী সর্বোচ্চ পাঁচ দিন এবং ভিন্ন শহরে বা গ্রামে
অবস্থিত হলে সর্বোচ্চ দশ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি প্রদান করতে হবে। পচনশীল দ্রব্য
দ্রুততম সময়ে ডেলিভারি দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ডেলিভারির সময় যাতে পণ্যের কোনো
ক্ষতি না হয় সেজন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যে কোনো ধরনের ঘোষিত
ডিসকাউন্ট বিক্রয় কার্যক্রমের সাথে সাথে কার্যকর করতে হবে। ক্যাশব্যাক অফার মূল্য
পরিশোধের পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হতে হবে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক,
বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, ই-ক্যাব এর সভাপতি শমী কায়সার, বিভিন্ন এসোসিয়েশনের
প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।