সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক ।।
১৭ আগস্ট এইচএসসি পরীক্ষা শুরু, পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ৫৯ হাজার
২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট):
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, আগামী ১৭ আগস্ট শুরু হচ্ছে ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এবার পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন পরীক্ষার্থী, যা গত বছরের চেয়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ জন বেশি। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। সারা দেশে ২ হাজার ৬৫৮টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি বছর সকল বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষার্থীরা অংশ নেবে। তবে আইসিটিতে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। সারা দেশে মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৬৫৮টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ১৬৯টি। ২০২২ সালে সব বোর্ড মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন। সেই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ জন।
মন্ত্রী জানান, দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেবে ১১ লাখ ৮ হাজার ৫৯৪ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ২৬ হাজার ২৫১ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৮২ হাজার ৩৪৩ জন। মোট কেন্দ্র এক হাজার ৫৩৫ এবং মোট প্রতিষ্ঠান ৪ হাজার ৬৪৭টি।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৯৮ হাজার ৩১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫৩ হাজার ৬৩ জন এবং ছাত্রী ৪৪ হাজার ৯৬৮ জন। মোট কেন্দ্র ৪৪৯টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৬৮৮টি।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় অংশ নেবেন এক লাখ ৫২ হাজার ৭১৭ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৯ হাজার ৫৭৩ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ১৪৪ জন। মোট কেন্দ্র ৬৭৪টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক হাজার ৮৩৪টি।
বিদেশে জেদ্দা, রিয়াদ, ত্রিপলী, দোহা, আবুধাবী, দুবাই, বাহরাইন, সাহাম, ওমান মোট ৮টি কেন্দ্রে ৩২৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগামী ১৭ আগস্ট থেকে দেশে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ১৪ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৪৩ দিন সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। নানা ধরনের কোচিং সেন্টার চলে। কোচিং সেন্টারগুলোতে একাডেমিকসহ নানা ধরনের কোচিং হয়। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত এই ৪৩ দিন সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
২০২৩ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে পূর্ণ নম্বর ও সময়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৭ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৬ সেপ্টেম্বর হতে শুরু হয়ে ৪ অক্টোবর শেষ হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৭ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ সেপ্টেম্বর হতে শুরু হয়ে ৪ অক্টোবর শেষ হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৭ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর হতে শুরু হয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হবে।
২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট):
ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী যথাযথ উৎসাহ উদ্দীপনা এবং তাৎপর্য সহকারে পালন করেছে। এ উপলক্ষ্যে দূতালয় প্রাঙ্গণ ব্যানার ও পোস্টারে সজ্জিত করা হয়। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বাণীপাঠ, আলোচনা সভা, প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন, বিশেষ খাবার পরিবেশন ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলাম খাঁন হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর, দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা পর্বে হাইকমিশনের কর্মকর্তাগণ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবনের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেন।
ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজির-এঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব শুধু জাতির পিতার সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিসংগ্রামের নেপথ্যের কারিগর হিসেবে প্রতিটি পদক্ষেপে বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলোতে ছিলেন দৃঢ় ও অবিচল। ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ অবদান রাখেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিতহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদানের ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার বাহিনী হাতে গৃহবন্দি অবস্থায় পাকিস্তানে কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুর জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বঙ্গমাতা সীমাহীন ধৈর্য্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সামাজিকভাবে তাদের মর্যাদার সাথে পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার বলেন, দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা, বিচক্ষণতা ও অবদানের জন্য জাতি তাঁকে বঙ্গমাতা উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বঙ্গমাতা জীবনে লালন ও ধারণ করে তাঁর সন্তানদের একই আদর্শে গড়ে তোলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই শিক্ষা, আদর্শ ও চেতনাকে অবলম্বন করে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গমাতার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার আরো বলেন, বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ যথার্থই তাঁর জীবন ও কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন। একজন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সহধর্মিণী হয়েও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব সবসময় সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। বঙ্গমাতা ছিলেন প্রখর আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন, নির্লোভ, নিরহংকার, দানশীল ও মহানুভবতার প্রতীক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এর কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সাথে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবও সপরিবারে স্বাধীনতা ও দেশ বিরোধী অপশক্তির হাতে শাহাদত বরণ করেন।
আলোচনা পর্বের পরে, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবনীভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরিশেষে, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট শহিদ তাঁর পরিবারের সদস্যের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট):
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে সান্ত্বনা ও সাহস জুগিয়েছেন মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতির পিতা হিসেবে গড়ে উঠা, বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পিছনে অসামান্য অবদান রয়েছে বঙ্গমাতার।
প্রতিমন্ত্রী আজ আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটরিয়ামে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমাননের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এডভোকেট আদিবা আনজুম মিতা, এমপি, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার, উইমেন এন্ড
ই-কমার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাড়ে তিন বছরের মধ্যে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন, দরিদ্র রাষ্ট্র থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে নিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যেটা এখন চিন্তা করলে অসম্ভব মনে হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পাঁচ দশক আগেই যে পাঁচটি মৌলিক অধিকারের কথা বলেছেন, মানিবক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব আজ তা অনুসরণ করছে। এই অধিকারগুলো নাগরিকদের জন্য নিশ্চিত করলেই একটি রাষ্ট্রকে মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ, পুঁজি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ২ হাজার নারী উদ্যোক্তাদের ৫০ হাজার করে অনুদান দিয়েছি। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আরো ৫ হাজার নারী উদ্যোক্তাতে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে। আজকের স্মার্ট নারীরা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন বলেও তিনি জানান।