ঢাকা, ১ ফাল্গুন (১৪ ফেব্রুয়ারি) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘অমর একুশে বইমেলা ও
অনুষ্ঠানমালা ২০২২' উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বাংলা একাডেমির উদ্যোগে ‘অমর একুশে বইমেলা ও অনুষ্ঠানমালা-২০২২’ এর আয়োজন
ইতোমধ্যে আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাস ঐতিহ্যের বিকাশে একটি অন্যতম প্রধান
অনুষ্ঠান ও উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমি অমর একুশে বইমেলার প্রাক্বালে একুশে ফেব্রুয়ারি
মহান ভাষা আন্দোলনে অমর শহিদদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্ৰদ্ধা।
অমর একুশের বইমেলা বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে
বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলা লেখক-পাঠক-সংস্কৃতিকর্মী তথা সমাজের নানা শ্রেণিপেশার
মানুষের মধ্যে অনন্য জাগরণ সৃষ্টি করে। বাঙালি সংস্কৃতির মৌলিক বৈশিষ্ট্য মানবতাবাদী
সংস্কৃতি। শ্রেণি-পেশা-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের মুক্তি ও সামগ্রিক বিকাশের লক্ষ্যে
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা অর্জন করি
বহুকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। ২০২১ সালে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার
সুবর্ণজয়ন্তী সাড়ম্বরে উদযাপন করেছে। এ প্রেক্ষাপটে এবারের অমর একুশে বইমেলার
প্রতিপাদ্য ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার
সুবর্ণজয়ন্তী’ অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতির পাদপীঠ বাংলা একাডেমি ১৯৫৫ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলা
একাডেমি মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে নানাভাবে ধারণ করে আছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে
বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধনে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্বপালন
করে আসছে। ভাষা শহিদদের রক্তস্নাত পথ ধরে গড়ে ওঠা বাংলা একাডেমি বাংলা সাহিত্য ও
সংস্কৃতিকে দেশ ও দেশের বাইরে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে সারাবিশ্বের বাংলা
ভাষাভাষী মানুষের প্রাণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এ প্রত্যাশা করি।
অমর একুশে বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা। বইকেনার পাশাপাশি আলোচনা সভা,
সংগীতানুষ্ঠান, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতির মাধ্যমে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে
সংস্কৃতির অমিয় সুধা। বাংলা একাডেমির এই প্রাঙ্গণে সৃজনশীল ও মননশীল লেখকদের বিকাশ ও
অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে অমর একুশে বইমেলা এক অবিকল্প আয়োজন। মহান ভাষা
আন্দোলনের চেতনাকে সমুজ্জ্বল রেখে ‘অমর একুশে বইমেলা’ বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও
ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হয়ে উঠবে এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আমি ‘অমর একুশে বইমেলা ও অনুষ্ঠানমালা-২০২২’ এর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”