হজ করার ইচ্ছে সব মুমিন মুসলিমের অন্তরে থাকে। তবে এর জন্য প্রয়োজন অর্থ। যাদের অর্থ আছে তাদের জন্য হজ ফরজ। বাকীদের জন্য নয়। এটিই ইসলামের বিধান। যা প্রতিবছর মুসলিমরা পালন করে থাকেন। এবারের হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে ২৭ জুলাই। গতকাল রোববার আরব আমিরাতের বিজ্ঞানীরা এমনটি জানিয়েছে। ইতোমধ্যে লাখ লাখ মুসল্লি সৌদি আববে অবস্থান করছেন হজল পালন করার জন্য। বিশ্বে নানা দেশ থেকে দলে দলে হজে যাচ্ছেন মুসলিমরা।
এদিকে ব্যতিক্রম এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তারতীয় এক যুবক। তিনি প্রায় সাড়ে আট হাজার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে হজ করতে গেলেন । পদব্রজে কেরালা থেকে সৌদি আরব যেতে তার সময় লেগেছে প্রায় এক বছর। পথে ভিসা বা অনুমতি নিয়ে নানা জটিলতা হলেও দমে যাননি।
পাকিস্তান, ইরান ও কুয়েত হয়ে পোঁছে গেছেন সৌদিতে। পবিত্র মক্কা নগরীতে শুরু করেছেন হজের আনুষ্ঠানিকতাও। বিরল কীর্তিতে সৌদিতেও সাড়া ফেলেছেন ভারতীয় এ নাগরিক। খবর টাইমস নাউ নিউজের।
পুরনো দিনে যখন মোটরযান ছিলো না, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হজ পালনে হেঁটে সৌদি আরব যেতেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। একসময় মাসের পর মাস জাহাজে থাকতে হতো হজযাত্রীদের। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে হজযাত্রার এসব চ্যালেঞ্জ এখন কেবলই ইতিহাস।
অবিশ্বাস্য এক কীর্তিতে একবিংশ শতাব্দীতে সেই ইতিহাস ফিরিয়ে আনলেন ভারতের শিহাব চট্টু। সবাই যখন বিমান কিংবা দ্রুতগতির জাহাজের যাত্রী, কেরালার মালাপ্পুরাম থেকে তিনি হেঁটেই গিয়েছেন মক্কায়।
গত বছরের জুনে শুরু হয় ২৯ বছর বয়সী এই যুবকের হজযাত্রা। ৮ হাজার ৬শ’ ৪০ কিলোমিটার হেঁটে প্রায় এক বছর পর পৌঁছেছেন পবিত্র নগরী মক্কায়। প্রতিদিনে গড়ে ত্রিশ কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটেছেন শিহাব।
নিজ দেশ ভারতেই হাঁটতে হয়েছে তিন হাজার কিলোমিটার পথ। পরে পাড়ি দিতে হয়েছে পাকিস্তান, ইরান ও কুয়েত। দীর্ঘ পথচলায় এসেছে অনেক বাধা-বিপত্তিও। পাকিস্তানের ভিসা পেতেই অপেক্ষা করতে হয়েছে চার মাসের বেশি। তবে হাল ছাড়েননি; ট্রানজিট ভিসার জন্য অপেক্ষার দীর্ঘ এ সময় পাঞ্জাবের একটি স্কুলে রাত কাটিয়েছেন।
পাকিস্তান থেকে ইরান; সেখান থেকে কুয়েত। এরপরই হয়েছে স্বপ্নপূরণ। কুয়েতের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সৌদিতে প্রবেশের পর শুরুতে গেছেন মদিনায়। সেখানে ২১ দিন থাকার পর পায়ে হেঁটেই রওনা হন মক্কার উদ্দেশে। ৯ দিন হেঁটে ৪৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছান শেষ গন্তব্য মক্কায়।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এই দীর্ঘ যাত্রার প্রতিদিনের আপডেট জানিয়েছেন শিহাব। তার দাবি, পূর্বপুরুষদের হেঁটে মক্কা যাওয়ার গল্প শুনেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন ব্যতিক্রমী হজযাত্রায়।