দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর উদ্দেশে কিছু কথা বলেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। এতে দেশের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে তিনি দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গঠিত হতে যাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কিছু দাবি জানিয়েছেন। বিরাজমান অরাজক পরিস্থিতি সম্মিলিতভাবে মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে নিজে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলেন জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘ছাত্রদের যেন আর গুলি না করা হয় সেই আহ্বান আমারও ছিল। অন্যায় আর অন্যায্যতার বিপরীতে ছাত্র-জনতার বিজয় অর্জিত হয়েছে।
এই আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীসহ অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এখনো অনেকে চিকিৎসাধীন। কিন্তু বিজয় পরবর্তী দেশজুড়ে নানা প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড এবং সুযোগসন্ধানীদের তাণ্ডব দেখে লাখো-কোটি মানুষের মতো আমিও ব্যথিত। এই হত্যাযজ্ঞ আর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের জন্যই কি ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমেছিল?’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করে সোহেল তাজ প্রশ্ন করেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও তার ভাস্কর্য ভেঙে দিয়ে আমাদের কতটুকু লাভ হলো? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্যায় করেছে, তার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। কিন্তু সবাইকে কেন প্রতিহিংসার মুখোমুখি করছি? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কোনো সভ্য সমাজ পরিচালনা করা সম্ভব না। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার আবেদন জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘গত কয়েক দিন দেশের নানা প্রান্তে ভিন্ন ধর্মের মানুষের মন্দির-গির্জায় আক্রমণ হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগসহ অনেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রয়েছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে অনেক নিরীহ কর্মী প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। চারদিকে এক থমথমে অবস্থার মধ্যে কী করে আমরা বাস করব?’
ছাত্র-জনতার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘দেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হোক। সাম্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ জন্য নিশ্চিত করতে হবে আইনের শাসন। বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন ও পুলিশবাহিনীকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের কথা বলার অধিকারসহ সকল মৌলিক অধিকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে হবে।’