ত্রিশাল (ময়মনসিংহ), ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৫ মে) :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে আনার সুবর্ণজয়ন্তী ২৪ মে
২০২২। ১৯৭২ সালের এই দিনে কবির ৭৩তম জন্মদিনের এক দিন আগে সকল আনুষ্ঠানিকতা
সম্পন্ন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে
সপরিবারে বাংলাদেশে আনেন।
এ উপলক্ষ্যে ডাক অধিদপ্তর ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক
ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম, ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড ও
একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ মঙ্গলবার কবির স্মৃতি বিজড়িত
ময়মনসিংহের ত্রিশালে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত
অনুষ্ঠানে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং ডাটা কার্ড ও বিশেষ
সিলমোহর প্রকাশ করেন। এ উপলক্ষ্যে মন্ত্রী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে
বাংলাদেশে আনার সুবর্ণজয়ন্তী’র তাৎপর্য তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলা ও বাঙালির সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের
প্রশ্নে যে দুটি মহাপ্রাণের নাম অপরিহার্যভাবে চলে আসে, তাঁরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান ও কাজী নজরুল ইসলাম। কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিদ্রোহী কবি। আর বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান ছিলেন ‘রাজনীতির কবি’। দুজনই স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। একজন গণমানুষের কথা
কবিতা আকারে বলে কারাবরণ করেছেন, আরেকজন কারাবরণ করেছেন গণমানুষের জন্য লড়াই করে।
জাতি-ধর্ম ভেদাভেদের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন এই দুই
মহাপুরুষ। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় কবি ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবির ৭৩তম জন্মদিনের
একদিন আগে ঢাকায় পৌঁছান, যেটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদযাপনের জন্য
নির্ধারিত ছিল। বঙ্গবন্ধু স্বয়ং কবির জন্য একটি বাংলো বাড়ি পছন্দ করে দেন এবং বাড়িটির
নামকরণ করেন ‘কবিভবন’। কবি ধানমন্ডির বাসভবনে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই বঙ্গমাতা শেখ
ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধু কবিকে সম্মান জানানোর জন্য ধানমন্ডির কবিভবনে আসেন।
পরে, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জাতীয় কবিকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয় এবং তাঁকে রাষ্ট্রীয়
সম্মান জানানোর জন্য ‘কবি ভবনে’ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
মন্ত্রী কাজী নজরুল ইসলামকে বাঙালি মনীষার এক অতুলনীয় সম্পদ উল্লেখ করে বলেন,
একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে
অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ এবং ধূমকেতুর
মতোই তাঁর প্রকাশ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু নজরুলের ‘চল চল চল’ গানটিকে রণসংগীত হিসেবে
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা
একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন প্রমূখ
উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত বইমেলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন এবং
‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে নজরুলের আগমন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।