২৩ জুলাই ২০২৩
প্রখর রোদ আর কাঠফাটা গরমের মধ্যেও সুবিশাল মরুভুমিতে বাস করে বেদুঈন সম্প্রদায়ের মানুষ। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) আবিষ্কারের আগে, তীব্র গরমের মধ্যে কীভাবে মরুভুমিতে থাকত বেদুঈনরা। কীভাবে জীবন-যাপন করত তারা?
বেদুঈনরা হলো আরবের মরুভূমির সবচেয়ে আদি বাসিন্দা। মরুর গরমেই যেহেতু ছিল তাদের বসবাস— সে কারণে গ্রীষ্মকালের জন্য নিজেদের সেভাবেই মানিয়ে নিত তারা। তীব্র গরমে নিজেদের শীতল রাখতে অবলম্বন করত বেশ কয়েকটি পন্থা।
আরব আমিরাতের শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ সেন্টারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রটোকল ম্যানেজার আহমদ আল জাফাল্লাহ জানিয়েছেন সেসব পন্থাগুলো—
বাতাসের গতিবিধি সম্পর্কে জ্ঞান
গ্রীষ্মকালের প্রস্তুতির সবচেয়ে ভালো উপায় ছিল— এটি আসছে সে সম্পর্কে জানা। বেদুঈনরা বাতাসের গতিবিধি সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে জানত। ঋতুর বিষয়ে ধারণা রাখার জন্য তারা আকাশের তারার গতিবিধির দিকে নজর রাখত। এরমাধ্যমে তারা বুঝত কোন অঞ্চলে সাগর থেকে ঠান্ডা বাতাস আর কোন অঞ্চলে মরুর গরম বাতাস আসত।
বেদুঈনরা দিনের তপ্ত সূর্য থেকে বাঁচতে রাতের বেলা চলাচল করত। এছাড়া যখনই প্রয়োজন তখনই ছায়ায় অবস্থান করত। তারা তাবু, টিলা, গাছ এমনকি তাদের উটের ছায়ায় বিশ্রাম নিত। ছায়ার জন্য যদি কিছুই না থাকত তাহলে তারা গর্ত খুড়ে সেটির ভেতর অবস্থান নিত। এতে রোদ সরাসরি শরীরের ওপর পড়ত না।
সঠিক কাপড় পরিধান
গরম থেকে বাঁচতে বেদুঈনরা সঠিক কাপড় নির্বাচন করত। নারী ও পুরুষ উভয়ের কাপড়ই বেশ লম্বা থাকত। এসব কাপড় তৈরিতে হালকা ও পাতলা উপকরণ, বিশেষ করে সুতা ব্যবহার করা হতো। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেদুঈনরা কয়েক ধাপের কাপড় পরত। এছাড়া হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে মাথার ওপর কাপর পরিধান করত তারা। মাথার কাপড়টি তাদের ধূলিঝড় থেকেও সুরক্ষা দিত।
নিজেদের হাইড্রেড রাখা
নিজেদের হাইড্রেড বা পানিশূন্যতা থেকে বাঁচাতে বেদুঈনরা সবসময় যচেষ্ট থাকত। মরুভূমিতে পানির উৎস সম্পর্কে তারা বেশ ভালোভাবে জানত। এছাড়া নাবিকরা জানতেন গ্রীষ্মে সমুদ্রের কোথায় সুপেয় পানি থাকবে। এই পানি পশুর চামড়া, মাটির পাত্র অথবা চামড়ার তৈরি বোতলে মজুদ করে রাখতেন তারা এবং প্রয়োজনে পান করতেন।
নিজেদের ঠান্ডা রাখা
বেদুঈন সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের ঠান্ডা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতেন। এ কারণে শরীরে পানি ঢালা বা সমুদ্রে গোসল করতেন তারা।
দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বিশ্রাম নেওয়া
আরব আমিরাতে কয়েক দিন আগে মধ্যাহ্ন বিরতি নামে একটি স্কিম চালু করা হয়। এরমাধ্যমে তপ্ত রোদে বাইরে সব ধরনের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেদুঈনরা অনেক আগে থেকেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা কাজ না করে ঘুম বা বিশ্রাম নিতেন।