তারিখ ১৪-০১-২৪ ইং;

সোহরাব হোসনে,গাজীপুর প্রতিনিধি:

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের লস্কর চালা এলাকায় গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। গরু দুটিরদাম প্রায় পৌনে ২ লক্ষ টাকা হবে বলে গরুর মালিক ছিদ্দিক মিয়া দাবি করেছেন। দুটি গরু চুরি হওয়ায় তিনি বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।গরুর মালিক ছিদ্দিক মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানান প্রায় প্রতিদিন এলাকা থেকে গরুসহ হাড়ি পাতিল, মোটরসাইকেল, লোহার রডসহ বিভিন্ন প্রকার মালপত্র চুরি হচ্ছে। এর আগে একই এলাকার কাইমুদ্দিনের একটি গরু আসাদুলের তিনটি, শহিদের বাড়ি থেকে একটি বড়চালা হেলালের একটি গরু চরির ঘটনা ঘটে। তবে এঘটনায় কেউই থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। থানায় অভিযোগ না করার কারন সম্পর্কে তারা জানায় থানায় অভিযোগ দিলে তারা কোন প্রতিকার পাবেনা। থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি দেখার জন্য মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপর দিয়ে দিবে আমরা কোন বিচার পাব না এই জন্য আমরা থানায় যাইনি। এজন্য তিনি প্রতিদিনই অনেক রাত পর্যন্ত তার ঘরের গরু পাহারা দেয়। তার পরেও চুিরর ঘটনা ঘটেছে।এছাড়া শুক্রবার রাতেও একই এলাকায় এমারতের বাড়ি থেকে সিলভারের হাড়িপাতিল ও একই এলাকার রফিক মাস্টারের বাড়ি থেকে কাপড় এবং শান্তা বেগমের বাড়ি থেকে মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে চোরের দল গরুর মালিক উল্লেখ করেন বুধবার দিবাগত রাতেও তিনি রাত একটা পর্যন্ত গোয়ালে গরু দেখে গোয়াল ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে শুয়ে পড়েন। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার ঘরে গরু নেই। ঘরে গরু না দেখে তিনি কান্না শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে তখন আশপাশে উপস্থিত লোকজনদেরকে তিনি জানায় তার দুটি গরু রাতে চুরি হয়ে গেছে। এ সময় গোয়াল ঘরের ভিতরে একটি টুপি পড়ে থাকতে দেখেন এবং কাউসার অনেক রাতে তার বাড়িতে পানি পান করার জন্য আসছিল। ঘরের ভেতর পড়ে থাকা টুপিটি কার এটা জানার জন্য টুপি নিয়ে বাজারে গিয়ে টুপির মালিক খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে বাজারে উপস্থিত তার পার্শ্ববর্তী বাড়ির কাউসার জানাই কুড়িয়ে পাওয়া টুপিটি তার। গরুর মালিকসহ উপস্থিত লোকজন কাউসারকে জিজ্ঞেস করেন ওই টুপিটি কি করে তার গোয়াল ঘরে গেল। কাউসার তখন জানায় টুপিটি আমার ভাতিজা রবিন নিয়ে গিয়েছিল।

রবিনসহ আরো কয়েকজন গরুর মালিকের বাড়ির দক্ষিণ পাশে বটতলায় বসে আগুন পোহাতে ছিল হয়তো ভুলে সে টুপিটি রেখে চলে এসেছে। রবিন টুপিটি নিয়েছে কিনা এটা জানার জন্য এলাকার লোকজন নিয়ে রবিনের বাড়িতে যায়। রবিন তখন বাড়িতে ছিলনা। তখন রবিনের বাবা রবিনকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে যে কাউসার তোকে টুপি দিয়েছিল কিনা । রবিন তখন কাউসারের নিকট থেকে টুপি নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ ঘটনাটি স্থানীয় মেম্বার সাহিদা বেগমকে জানালে তিনি তার পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে জানিয়ে কাউসারকে ডেকে বিষয়টি জানার জন্য একটি তারিখ দেয়। কিন্তু বাদী পক্ষরা সকলেই বিচারস্থলে হাজির হলেও অজ্ঞাত কারণে কাউসার বিচারস্থলে উপস্থিত হয়নি। এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় কেন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে গরুর মালিক জানায় কালিয়াকৈর থানায় যাওয়ার মতন আমাদের কাছে কোন টাকা পয়সা নেই এমনকি থানায় মামলা দিলে কি হবে থানায় মামলা দিলে বিষয়টি দেখার জন্য মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপর দিয়ে দিবে আমরা কোন বিচার পাব না এই জন্য আমরা থানায় যাইনি।

এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার সাহিদা আক্তার জানাই আমি অনেক চেষ্টা করেছি বিচারটি করার জন্য কিন্তু চেয়ারম্যানের জন্য বিচার করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় মাতব্বর ডাক্তার আজিজুর রহমান জানায় চেয়ারম্যানের লোকজন এ ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে এই জন্য চেয়ারম্যান এই বিচার করেনি। বিচার করলে তো থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

এ ঘটনায় মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানায় গরুর মালিক তার নিকট লিখিত কোন অভিযোগ না দেওয়ায় গরু চোরের বিচার করা সম্ভব হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিচার করা হবে। এলাকাবাসীর দাবি গরুর গোয়ালে যার টুপি পাওয়া গেছে তাকে ধরলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে কারা কারা গরু চুরিসহ এলাকায় চুরির ঘটনায় জড়িত রয়েছে।

কালিয়াকের থানার অফিসার্স ইনচার্জ এস এম নাসিম জানায় লোকজন যদি আমাদেরকে না জানায় তা হলে আমরা কিভাবে প্রতিকার করবো। প্রশাসনের প্রতি স্থানীয় এলাবাসীর প্রশ্ন সাধারন জনগন কি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার সহ পুলিশের কাছে কোন বিচার চেয়ে ন্যায় বিচার পাবেনা। ক্ষতিগ্রস্থরা কি বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। পুলিশের প্রতি তাদের এত অবিশ্বাস কেন ? প্রভাবশালীদের কারনে কি অসহায় দরিদ্র জনগন ন্যায্য বিচার পাবেনা? প্রভাবশালীরা কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও ক্ষমতাধর ? পুলিশ বাহিনীর কাছে সজনগন গিয়ে ন্যায় বিচার পায় এমনটা ই প্রত্যাশা করে এলাকার জনগন।