ঢাকা, ৯ অগ্রহায়ণ (২৪ নভম্বের) :
কৃষিখাতে সহযোগিতা ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে
ট্রেড মিশন পাঠাবে নেদারল্যান্ডস। একইসাথে, দেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, পেঁয়াজ
ও আলু সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনসহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন, গ্রিন হাউজ ও গ্লাস
হাউজ তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী
লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
আজ সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে
মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্যের রপ্তানি এবং কৃষিখাতে পারস্পরিক
সহযোগিতা বাড়াতে গত ০৯ নভেম্বর ১৮ থেকে নভেম্বর নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফর করেছেন
কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদের একটি প্রতিনিধিদল। এ বিদেশ
সফর ও কৃষির সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে মন্ত্রী প্রেস ব্রিফিং করেন।
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী জানান, নেদারল্যান্ডস বেসরকারি খাত থেকে উন্নত উৎপাদন
প্রযুক্তি, সংগ্রহ, সংগ্রহত্তোর প্রযুক্তি, বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ তৈরির প্রযুক্তিগত
দিক, রিয়েল টাইম স্বয়ংক্রিয় রিপোর্টিং ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং মানবসম্পদ
উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষায় সহায়তা পাওয়া যাবে। এসব বিষয়ে ওখেনিঙেন
বিশ্ববিদ্যালয় ও রিসার্চের সাথে সমঝোতা স্মারক শিগগিরই স্বাক্ষর হবে। এছাড়া, দেশে ঘাটতি
হলে সেপ্টেম্বর মাসে নেদারল্যান্ডসে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা ও কৃষি
প্রক্রিয়াকরণে ডাচ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী আরো জানান, আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন, ইন্টার ল্যাবরেটরি
টেস্টিং ভ্যালিডেশন, ISO 17025 Standard এর জন্য কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের
ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা
স্মারক স্বাক্ষর হবে। এছাড়া, গ্রিনিচ ইউনিভার্সিটির সাথে প্রশিক্ষণ সহযোগিতার
প্রক্রিয়া এবং ব্রিটেনের সুপার স্টোর সেইন্টসবারি, আজডা, টেসকোর সাথে ব্রিটিশ
বাংলাদেশ চেম্বারের মাধ্যমে বাজার সংযোগ সৃষ্টি হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের
আমলে দেশে খাদ্য উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আলু, শাকসবজি, আমসহ অনেক
ফসলে আমরা উদ্বৃত্ত। এসব কৃষিজ পণ্য রপ্তানির এক বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও সেই সুযোগ
আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। গত অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি পূর্বের বছরের তুলনায়
প্রায় চারগুণ বেড়ে ১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি টেকসই ও ত্বরান্বিত
করতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষ্যে প্রাইমারি প্রসেসিং, প্যাকিং হাউস ও টেস্টিং ক্যাপাসিটি
উন্নয়ন তথা আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন ও উন্নয়নে কাজ করছে।
ডিজেলে ভর্তুকি ও সারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন,
কৃষকদেরকে আপাতত ডিজেলে ভর্তুকি দেয়ার পরিকল্পনা নেই। এছাড়া, কৃষকদেরকে সেচকাজের জন্য
ডিজেলে ভর্তুকি দেয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। সেচের কথা বলে পাম্পে বা অন্যত্র কাজে লাগায়।
আর বিশ্ব বাজারে সারের দাম চারগুণ বাড়লেও দেশে সরকার এই মুহূর্তে সারের দাম বাড়াবে না।
ব্রিফিংয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সচিবের রুটিন দায়িত্বরত ড. মো: আবদুর
রৌফ, অতিরিক্ত সচিব মো: রুহুল আমিন তালুকদার, হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি বিপণন
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও
আহসান খান চৌধুরী, এসিআই এগ্রো লিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এফএইচ আনসারী,
স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত
ছিলেন।