নিউইয়র্ক, ৭ অক্টোবর :
কোভিড-১৯ সৃষ্ট ভয়াবহ দৃশ্যপট তুলে ধরে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী
প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ফাতিমা কোভিড ভ্যাকসিন লাভে সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী অধিকার
নিশ্চিত করতে অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানান যাতে সকলেই কোভিড সংকট থেকে
টেকসই ও ন্যায়সংগত পুনরুদ্ধারের সুযোগ পায়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম
অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বক্তব্য অনুসরণে
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে
প্রযুক্তি ভাগ করে নিলে উৎপাদন ও বিতরণ পর্যায়ে বিশাল সক্ষমতা সৃষ্টি হবে যা
ভ্যাকসিন সমতা নিশ্চিত করতে পারবে।
আজ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ
বিতর্কে বক্তৃতাকালে এসকল কথা বলেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটি কোভিড-১৯ অতিমারি এবং বৈশ্বিক জলবায়ু
পরিবর্তনজনিত দ্বৈত সংকটকালে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘সংকট,
প্রতিকূলতা মোকবিলায় সক্ষমতা এবং পুনরুদ্ধার – এজেন্ডা ২০৩০ এর অগ্রগতি
ত্বরান্বিত করা’। প্রতিপাদ্যের লক্ষ্য অতিমারি থেকে টেকসই ও সক্ষমতাপূর্ণ
পুনরুদ্ধারের জন্য সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী বৈশ্বিক রোডম্যাপকে এগিয়ে নেওয়া এবং
যথাসময়ে এজেন্ডা ২০৩০ অর্জন করা।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায় গৃহীত সাম্প্রতিক
পদক্ষেপসমূহের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, আসন্ন জলবায়ূ ও
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রাষ্ট্র সম্মেলনে যাতে সাহসী ও উচ্চাভিলাষী ফলাফল অর্জিত হতে
পারে সে বিষয়ে আরো গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা দরকার। তিনি আরো বলেন, ৪৮টি দেশের
সমন্বয়ে গঠিত ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম -এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক
উষ্ণায়ন হ্রাস, জলবায়ু-অর্থায়ন বৃদ্ধি, প্রযুক্তি হস্তান্তর সহজতর করা এবং অভিযোজন
পদক্ষেপসমূহের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
দেশের বাইরে থেকে আসা অর্থায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রপ্তানি
আয়, রেমিটেন্স, ওডিএ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেসরকারি অর্থায়ন পুনরুজ্জীবিত
করতে উন্নয়ন অংশীদারদের যে ভূমিকা রয়েছে তা পালনের প্রতি অনুরোধ জানান।
রেমিটেন্সের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় চাকুরি পুন:প্রাপ্তিতে অভিবাসী
কর্মীদেরকে অন্তর্ভুক্ত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল
প্রযুক্তির ভূমিকার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ডিজিটাল বৈষম্য দূর
কল্পে সকল অংশীজনদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের
উত্তরণ প্রক্রিয়ার উদাহরণ টেনে তিনি এলডিসিসহ সদ্য উত্তরিত দেশগুলোর জন্য সাহসী
ও উচ্চাভিলাষী কর্মসূচি গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে নারীদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের কথা তুলে
ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও উত্তরণ প্রচেষ্টায় অবশ্যই
নারীদেরকে সম্মুখসারিতে স্থান দিতে হবে।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়াবলী নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ
পরিষদের দ্বিতীয় কমিটি কাজ করে থাকে।