ঢাকা, ২১ আষাঢ় (৫ জুলাই) :
কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের জন্য বিদেশগামী কর্মীদের সুরক্ষা অ্যাপে আজ থেকে
নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হলো।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ আজ বিদেশগামী
কর্মীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদান সংক্রান্ত এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে
সুরক্ষা অ্যাপে বিদেশগামী কর্মীদের এই নিবন্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রেস
ব্রিফিংয়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম
জিয়াউল আলম। এতে আরো বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান
মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশগামী কর্মীদের
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা ভ্যাক্সিন প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন,
বিদেশগামী কর্মীদের দ্রুত ও সহজ উপায়ে কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের লক্ষ্যে সুরক্ষা
অ্যাপে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। সকল বিদেশগামী কর্মী পর্যায়ক্রমে কোভিড-
১৯ টিকার আওতায় আসবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, সুরক্ষা
অ্যাপে নিবন্ধনের পর নিবন্ধনকারী কর্মীকে মেসেজের মাধ্যমে টিকা প্রাপ্তির স্থান ও
তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।
সরকার সবসময় প্রবাসী কর্মীদের পাশে রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,
প্রবাসীদের যেকোনো সমস্যায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর যৌথভাবে সমাধান করে থাকে।
এরই অংশ হিসেবে এই মহামারি পরিস্থিতিতে বিদেশগামী কর্মীদের কোভিড-১৯ টিকা
প্রদানের লক্ষ্যে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয়েছে।
বিদেশগামী কর্মীদের কোভিড-১৯ টিকা পেতে বিএমইটি’র নিবন্ধন আবশ্যক উল্লেখ
করে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে টিকা গ্রহণের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের লক্ষ্যে
বিএমইটি’র ডাটাবেজে কর্মীদের নিবন্ধন চলছে। সুরক্ষা অ্যাপে সাধারণভাবে জাতীয়
পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়।
লিঙ্ক https://surokkha.gov.bd/enroll
কিন্তু বিদেশগামী কর্মীদের সুবিধার্থে তাদের বৈধ
পাসপোর্ট দিয়ে বয়স নির্বিশেষে এই অ্যাপে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এ জন্যই
কর্মীদের আগে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধিত হতে হবে। তিনি বলেন, দেশের সকল জেলা
জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস (ডিইএমও) ও নির্ধারিত ৯টি টিটিসি এবং ১টি আইএমটি’র
পাশাপাশি ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি’র নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিদেশগামী কর্মীদের বিএমইটি’র নিবন্ধনের সুবিধার্থে ঢাকা ও
আশেপাশের এলাকায় ৩টি সাবসেন্টার খোলা হয়েছে। সাবসেন্টারগুলো হলো- সাভার, ধামরাই
ও মিরপুর এলাকার জন্য বাংলাদেশ-কোরিয়া টিটিসি-মিরপুর; দোহার, নবাবগঞ্জ ও
কেরাণীগঞ্জ এলাকার জন্য কেরাণীগঞ্জ টিটিসি এবং গাজীপুর এলাকার জন্য গাজীপুর জেলা
মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, বিএমইটি’র ডাটাবেজ ও সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধিত
কর্মীদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে সৌদি আরব ও কুয়েতগামী কর্মীদের ফাইজার টিকা
প্রদান করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশে যাওয়া কর্মীদের প্রযোজ্য অন্যান্য টিকা
প্রদান করা হবে। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধিত কর্মীরা তাদের ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট প্রদর্শন
করে অ্যাপের নির্দেশিত তারিখ ও স্থানে টিকা গ্রহণ করবেন।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা সর্বদা দেশের ১৭ কোটি মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এ মহামারিকালে
তাদেরকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন। তিনি আরো বলেন, প্রবাসীরা
রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী কর্মীদের অবদানকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাদের প্রেরিত
রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান করছেন। বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে
বিদেশগামী কর্মীদের সমস্যা সমাধানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রয়োজনে ডিজিটাল
প্লাটফর্মে কাজ করতে হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো অংশগ্রহণ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক
প্রফেসর ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ
ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ শহীদুল আলম এনডিসি, ইমিগ্রেশন ও
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধুরী, তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেন এবং ন্যাশনাল
টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান
এবং সুরক্ষা অ্যাপ ডেভলপার টিমের প্রোগ্রামার মোঃ হারুন-অর-রশিদসহ সংশ্লিষ্ট
মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিগণ।