নিউইয়র্ক, ২৬ মার্চ :
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন,
বাংলাদেশে সংঘটিত ১৯৭১ সালের গণহত্যার ঘটনা নথিভুক্ত করা হলেও এখনো পর্যন্ত জাতিসংঘে
স্বীকৃতি লাভ করেনি। গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের পদক্ষেপসমূহ অসম্পূর্ণই থেকে যাবে যদি
সংঘটিত গণহত্যার মতো ঘটনাগুলো অস্বীকৃত থেকে যায়।
‘গণহত্যা প্রতিরোধ; অতীত ট্রাজেডির স্বীকৃতি ও ক্ষতিগ্রস্তদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার’
শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে স্থায়ী প্রতিনিধি একথা বলেন। ‘গণহত্যা দিবস-২০২২’ পালনের অংশ
হিসেবে এ সেমিনার আয়োজন করে বাংলাদেশ মিশন।
সেমিনারের মূল বক্তা ছিলেন কর্নেল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জন হাবেল ওয়েইস। জাতিসংঘে
নিযুক্ত বসনিয়া ও হার্জগোভিনার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত সোভেন আলকালাজ, কম্বোডিয়ার
স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত সোভানকি এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এর
প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বাউল প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া আরো
বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিবের গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা আন্ডার
সেক্রেটারি জেনারেল অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতু। সঞ্চালক ছিলেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ, ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোন এবং ১ কোটি মানুষকে
বাস্তুচ্যুত করার ইতিহাস উল্লেখ করে ফাতিমা বলেন, এর সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ
‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর মাধ্যমে। গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও
স্বাধীনতার আকাঙ্খা চিরতরে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা। কিন্তু হানাদার বাহিনীর সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়নি।
এর বদলে জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
বাঙালি জাতি। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্মের মাধ্যমে যার সমাপ্তি হয়েছিল।
সেমিনারের প্রফেসর ওয়েইস বিশ্বে সংঘটিত বিভিন্ন গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায় কর্তৃক গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার আইনি ও ঐতিহাসিক দিকগুলি বিশদভাবে ব্যাখা
করেন।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটিবিডি) এর প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার
তাপস কান্তি বাউল সম্পূরক নীতির আওতায় গণহত্যা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধে
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার সংক্রান্ত অনুশীলন এবং জাতীয় ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে
ধরেন।
স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনেও গণহত্যা দিবসটি পালন করা হয়।
৭১ এর গণহত্যার ওপর একটি প্রামাণ্য ভিডিও উভয় অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।