ইসরাইলের অমানবিক হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের মিসরীয় ফুটবলার মোহাম্মদ সালাহ। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় অবরুদ্ধ গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তার অনুমতি দেওয়ার জোর দাবি জানান এই লিভারপুল ফরোয়ার্ড।
ভিডিও বার্তায় তিনি ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় সহিংসতার এক সপ্তাহ পার হলেও ফিলিস্তিন ইস্যুতে তার নিজ দেশ মিসরের নীরব থাকার তীব্র সমালোচনাও করেন সালাহ। সালাহ বলেন, ‘এমন কথা বলা সব সময় সহজ নয়। এখানে অনেক বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অত্যন্ত হৃদয়বিদারক বর্বতার ঘটনা ঘটেছে। সব জীবনই পবিত্র এবং প্রত্যেকের বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।’
লিভারপুল ফরোয়ার্ড আরও বলেন, ‘গণহত্যা বন্ধ করা দরকার; পরিবারগুলোকে ছিন্নভিন্ন করা হচ্ছে। এখন এটি পরিষ্কার যে, অবিলম্বে গাজায় মানবিক সাহায্যের অনুমতি দিতে হবে। সেখানকার মানুষ ভয়ানক অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’
এর আগে গত এক সপ্তাহ ধরে গাজা ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করেননি সালাহ। ফলে তার মিসরীয় ভক্তদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ইংলিশ ফুটবল লিগের ক্লাব লিভারপুরের এই ফরোয়ার্ড। এছাড়া তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সালাহকে আনফলো করার ক্যাম্পেইনও শুরু করেন।
মিসরীয় ফুটবল ভক্তরা মনে করছেন, গাজা ইস্যুতে সালাহ’র অবশ্যই ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত। তাদের রক্ষায় কথা বলা উচিত ছিল। মঙ্গলবার গাজার অভ্যন্তরে একটি ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার ঘটনার সমালোচনায় সালাহ বলেন, ‘গত রাতে হাসপাতালের দৃশ্যগুলো ছিল ভয়ঙ্কর। গাজার জনগণের জরুরিভাবে খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ প্রয়োজন। আমি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে নিরীহ আত্মাদের আরও হত্যা প্রতিরোধে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। মানবতা অবশ্যই জয়ী হবে।’
ইসরাইলের অমানবিক হামলার তীব্রতা কতটা মারাত্মক ছিল তা গত এক সপ্তাহের মৃতের সংখ্যা বিবেচনা করলেই আঁচ করা যায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩ হাজার ৪৭৮ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১২ হাজার ৬৫ জন। এরপর গাজায় যেন কোনো ধরনের মানবিক সাহায্য পৌঁছানো না যায় সেজন্য উপত্যকাটিকে চারদিক থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল।