১৫ জুলাই ২০২৩
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো বিপৎসীমা ওপরে আছে দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি। এতে জেলার ৯টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি ৩০ হাজার মানুষ।
প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি ঘরবাড়ি তলিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষজন। তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় নিচু স্থানের ঘরবাড়িগুলো পানিতে নিমজ্জিত। বানভাসিরা আসবাবপত্র, গবাদিপশু পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানগুলোতে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবারের সংকটে পড়েছে বানভাসি মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ভোর ৬টার তথ্য অনুযায়ী, জেলার ধরলা নদীর পানি কমে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১ সেমি, দুধকুমার নদের নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কাউনিয়া পয়েন্ট তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়ন কদমতলা গ্রামের হোসেন আলী বলেন, পানি বাড়ায় এলাকার অনেক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ধানের বীজতলা, পটলের ক্ষেত এখন পানির নিচে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া বের হওয়ার কোনো উপায় নাই।
চর জগমন গ্রামের মো. হযরত আলী বলেন, পানি ঘরে ঢুকে খাট তলিয়ে গেছে। রান্নার চুলা পানির নিচে। ঘরে চাল থাকলেও আগুন জ্বালানোর কোনো উপায় নাই। এখন শুকনো খাবার প্রয়োজন। কিন্তু ঘর থেকে বের হওয়ারও সুযোগ নেই।
চর জগমন গ্রামের ছালেহা বেগম বলেন, কিছুদিন আগে পানি ওঠার অল্প সময়ের মধ্যে নেমেও যায়। কিন্তু এবার পানি বাড়ার ধরন আলাদা। পানিতে ঘর অর্ধেক ডুবে গেছে। দুদিন ধরে ঘরের জিনিসপত্র, হাঁস-মুরগি নিয়ে তাবু টাঙিয়ে ব্রিজে আছি। আমাদের কেউ খোঁজ নেয় না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, তিন-চারদিন পানি ওঠানামা করতে পারে। এরপর পানি নেমে যাবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জাগো নিউজকে বলেন, এরই মধ্যে ৬৫ টন চাল জেলার ৯ টি উপজেলায় উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৫৮৫ টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ১৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুত আছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হবে।