মোঃ সাকিবুল হাসান, কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার চান্দিনায় কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে ইট প্রস্তুত করছে ভাটাগুলো। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে উৎপাদন মুখি কৃষি আবাদী জমি। এছাড়া ট্রাক্টারে মাটি পরিবহনের মাধ্যমে আশেপাশের জমিগুলোরও ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে। এতে প্রচুর ধুলাবালি উড়ছে যা শিশু সহ জনস্বাস্থের জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে সম্প্রতি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫টি ইট ভাটাকে মোট সাড়ে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এতেও কাজ হচ্ছে না। ভাটাগুলো দেদারসে কৃষি জমি থেকে টপ সয়েল কেটে নিচ্ছে।
সোমবার ১২ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে মুরাদপুর, ভারভাঙ্গা, ভুয়ারী সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে স্থাপিত মেসার্স বিছমিল্লাহ ব্রিকস নামের একটি ইট ভাটা পার্শ্ববর্তী জনৈক সৈয়দ আলির মালিকানাধীন ৩৪ শতাংশের একটি কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ।
কৃষি জমিটি গভীর করে মাটি কেটে নেওয়ায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পার্শ্ববর্তী জমিগুলো ভাঙ্গনের মুখে পড়বে। ট্রাক্টরে ৪-৫ দিন ধরে একটানা মাটি পরিবহন করায় আশেপাশের কৃষি জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভাটার মালিক ও জমির মালিক স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হচ্ছে না।
এদিকে জমির মালিক সৈয়দ আলি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। জমিটির শ্রেণি পরিবর্তন না করেই পুকুর কাটছেন বলে অভযোগ উঠেছে।
এব্যপারে জমির মালিক সৈয়দ আলি বলেন ‘আমি জমিটাতে পুকুর কাটছি। মাছ চাষ করব।’
ইট ভাটার মালিক আনিছুর রহমান বলেন- এই জমিটি নিচু। এখানে একটি ফসল হয় মাত্র। বাকী সারা বছর পানি লেগে থাকে। আর মাটি তো আমরা কাটছি না। মাটি ব্যবাসায়ীরা দিচ্ছে। তারা কোথা থেকে মাটি আনে সেটা আমরা জানিনা।
এদিকে উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের নরসিংহপুরে অবস্থিত মেসার্স পূবালী ব্রিকস এর বিরুদ্ধেও কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইট ভাটাটি একই ইউনিয়নের ভারভাঙ্গা গ্রামের কৃষি জমি থেকে মাটি এনে ইট প্রস্তুত করছে। এক্সকেভেটর দিয়ে রাতের আঁধারে মাটি কেটে ৯ টি ড্রামট্রাকে পরিবহন করা হচ্ছে। এতে রাস্তাঘাট ও পার্শ্ববর্তী কৃষিজমি গুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
এবিষয়ে মেসার্স পূবালী ব্রিকস এর মালিক আতিকুল আলম শাওন বলেন- আপনারা অনুসন্ধান করে রিপোর্টটা আইনের লোকদের কাছে দিন। তারা ব্যবস্থা নিবে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোরশেদ আলম জানান- আমি সমন্বয় কমিটি সভায় কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নেওয়ার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেছি। মাঠে গিয়ে কৃষকদের সচেতন করেছি। তারপরও এই বিষয়টি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাবের মো. সোয়াইব জানান- আমি বিছমিল্লাহ ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছি। মুরাদপুর থেকে কৃষি জমির মাটি কাটার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।