নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কেন নিষিদ্ধ হয়েছে তা নিয়ে কিছু লোক প্রশ্ন তুলেছেন, সমালোচনাও করেছেন। যা সামনে এনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় শফিকুল আলম নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের গত ১২ বছরের সব অপকর্ম ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম তুলে ধরে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। যা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ওপর করা একটি গবেষণা।
শফিকুল আলম বলেন, এই গবেষণায় প্রমাণ করে ছাত্রলীগ কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কতটা উগ্র ছিল।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ছাত্রলীগকে আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। ক্যাম্পাস সন্ত্রাসী মুক্ত রাখতে হবে। এ জন্য দরকার সুস্থ ধারার কার্যক্রম পরিচালিত করা।
মূলত নতুন করে রাষ্ট্র মেরামত করতে হলে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস দূর করত হবে বলেও জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘যেহেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করিয়া বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজী, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এতৎসম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সকল প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হইয়াছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
যেহেতু ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করিয়া শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করিয়াছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত।
সেহেতু সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল।