৫ জানুয়ারি, ২০২৩:

নতুন বছরে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, ২০২৩ সালে মন্দার কবলে পড়বে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ দেশ, যার প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বে। এমনকি যারা সরাসরি মন্দার কবলে পড়বে না, তাদের গায়েও আঁচ লাগবে।

আইএমএফ বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুদহার বেড়ে যাওয়া ও চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসের বিস্তার—এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। এতে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ দেশের অর্থনীতি চলতি বছর মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।

সম্প্রতি সিবিএস নিউজের এক অনুষ্ঠানে আইএমএফের প্রধান এ আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন। এর আগে গত অক্টোবরে প্রকাশিত আইএমএফের অর্থনৈতিক আউটলুকে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমানো হয়।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের বয়স এক বছর হতে চলল। যুদ্ধ কমে থামবে, তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে বিশ্বের খাদ্যসংকট। জাতিসংঘ ও তার সহযোগী সংস্থাগুলোও উদ্বেগ জানাচ্ছে। গত ডিসেম্বর মাসে তারা উদ্বেগ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে মানবিক সাহায্য বাবদ অন্তত ৫ হাজার ১৫০ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে ৬৯টি দেশে আনুমানিক ৩৩ কোটি ৯০ জন মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে, ২০২২ সালের তুলনায় যা ৬ কোটি ৫০ লাখ বেশি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকে। যুদ্ধের কারণে গত বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে খাদ্য পরিবহন ব্যাহত হয়। ফলে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মূল্যসূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিবের উপস্থিতিতে কৃষ্ণসাগর দিয়ে খাদ্যশস্য পরিবহনে রাশিয়া ও ইউক্রেনের চুক্তি হয়। উভয় পক্ষই সম্মত হয়, শস্যবাহী জাহাজে রাশিয়া বা ইউক্রেন কেউ হামলা করবে না। এই অঙ্গীকারের বরখেলাপ যে একেবারে হয়নি, তা নয়।

তবে সমুদ্রপথে খাদ্যশস্য রপ্তানি একেবারে বন্ধ হয়নি কখনো। চুক্তির ধারা অনুযায়ী, এর সময়সীমা ছিল গত বছরের ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে ১৭ নভেম্বরের পর তা আরও ১২০ দিন বাড়ানো হয়েছে। ফলে কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী বন্দরগুলো থেকে শস্যদানা, খাদ্যসামগ্রী ও সার রপ্তানি চলমান আছে।

 

সূত্র: গার্ডিয়ান