অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ১৭দিন পর আজই প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।
২৬ মিনিট দীর্ঘ ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে সমর্থন দেয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সরকার প্রস্তুত, কিন্তু সেজন্য ধৈর্য ধরতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমাদের সিদ্ধান্ত নয়।
তিনি বলেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। আমরা ক্রমাগতভাবে সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাবো যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়-আমরা কখন যাবো। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাবো।
তিনি বলেছেন, “এখনই সব দাবি পূরণ করার জন্য জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যক্তি-বিশেষকে হুমকির মধ্যে ফেলা, মামলা গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করা, বিচারের জন্য গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে আদালতে হামলা করে আগেই একধরনের বিচার করে ফেলার যে প্রবণতা, তা থেকে বের হতে হবে।”
“ছাত্র–জনতার বিপ্লবের গৌরব ও সম্ভাবনা এসব কাজে ম্লান হয়ে যাবে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাও এতে ব্যাহত হবে।”
দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময়ে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সব খাতে সংস্কার করা হবে।
আয়নাঘরের মত অপকর্মের বিচার, রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং পুলিশ কমিশন গঠনের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া জাতির উদ্দেশে দেয়া নিজের প্রথম ভাষণে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা এবং এজন্য আইনের নিপীড়নমূলক ধারা সংশোধনের কথাও বলেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে নিহত ছাত্র–জনতাকে স্মরণ এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে ভাষণ শুরু করেন প্রধান উপদেষ্টা।
জুলাই ও অগাস্টে ছাত্রবিক্ষোভ দমনে চালানো নিপীড়ন তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, এ সপ্তাহেই সে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া জুলাই গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখতে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করা হবে, যার চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দায়িত্ব পালন করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন জুলাই অগাস্ট মাসে ছাত্রদের আন্দোলন দমনে সময় করা গায়েবি সব মামলা প্রত্যাহার হবে।