নিউইয়র্ক, ১৭ ডিসেম্বর :
গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘে
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হয়।
কোভিড-১৯ এর নতুন ধরণ ‘ওমিক্রণ’ এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় নির্দেশনা অনুযায়ী
ভার্চুয়ালি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, যুক্তরাষ্ট্র
আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় সম্পৃক্ত তরুন বাংলাদেশী-আমেরিকানসহ বিভিন্ন
শ্রেণি পেশার প্রবাসী বাংলাদেশী নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্ম-উৎসর্গকারী বীর শহীদগণের স্মরণে একমিনিট
নিরবতা পালন ও তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। দিবসটি
উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ
করা হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত
রাবাব ফাতিমা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতাসহ ১৫ আগস্টের
শাহাদৎবরণকারী জাতির পিতার পরিবারের সদস্য, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের
৩০ লাখ শহীদ ও দুইলাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা
জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তাঁর কন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রুপকল্প ২০২১, রুপকল্প ২০৪১ ও ডেল্টা পরিকল্পনা
২১০০ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এবছর নভেম্বর মাসে স্বল্পোন্নত দেশের
ক্যাটেগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমরা জাতিসংঘের চুড়ান্ত অনুমোদন
লাভ করেছি, যা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের মর্যাদা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি
করেছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ এখন শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন
এজেন্ডা, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, বিশ্বশান্তি রক্ষা, দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়ক
আলোচনা ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বহুপাক্ষিক প্লাটফর্মে বাংলাদেশ নেতৃত্বশীল ভূমিকা রেখে
চলেছে।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটসহ বাঙালি জাতির চুড়ান্ত বিজয়
অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রামের নানা দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী
প্রতিনিধি। জাতির পিতা ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের মধ্যে যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান
করছেন, তাদের দেশের ফিরিয়ে বিচারের আওতায় আনতে প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেন
তিনি। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী
সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তান এবং নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশী-আমেরিকান
নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বাংলাদেশের উন্নয়ন তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্পসমূহের
বাস্তবায়নে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বিজয়ের
সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকে জাতির পিতার আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের
চেতনায় উজ্জ্বীবিত করার প্রয়াসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক শপথবাক্য পাঠ
অনুষ্ঠানের রেকর্ডকৃত অংশ শোনানো হয়।