নিউইয়র্ক, (১০ ডিসেম্বর) :
গতকাল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন
সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত
রাবাব ফাতিমা বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন। বিশ্বব্যাপী শান্তির
সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট
অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানান। রেজুলেশন উত্থাপনকালে ফাতিমা বলেন, এবছর
রেজুলেশনটি আরো প্রাসঙ্গিক ও জরুরি কারণ বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারির নজীরবিহীন
ও বহুমূখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলেছি।
১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি প্রথমবারের মতো
গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ
সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন এবং বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি ফোরামের আয়োজন করে
আসছে। এবছর ৭ সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড পরবর্তী
পূনরুদ্ধার কার্যক্রমসমুহে সকলের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘূরে
দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি আরো এগিয়ে নিতে শান্তির সংস্কৃতি যে রূপান্তরধর্মী
ভূমিকা পালন করতে পারে তা তুলে ধরা হয়।
এই বছর রেজুলেশনে কোভিড-১৯ কালীন বাস্তবতাসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। এতে উঠে
এসেছে আয়, সুযোগ, তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা,
স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ভ্যাকসিনের নতুন চ্যালেঞ্জসমূহের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যসমূহ।
এছাড়া কোভিড-১৯ এর সময়ে লিঙ্গ বৈষম্য ব্যাপকতর হয়েছে; ঘৃণাত্বক বক্তব্য, কালিমা
লেপন, বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষ অর্থাৎ যে সমস্ত বিষয় শান্তি বিপন্ন করে তা
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সহনশীলতা, বৈষম্য বিলোপ, বহুত্ববাদ,
মত প্রকাশ ও কথা বলার স্বাধীনতাসহ ঘৃণাত্বক বক্তব্য মোকাবিলা করার মতো বিষয়গুলো
আরো এগিয়ে নেওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাড়াতে
সক্ষম, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই কোভিড পূনরুদ্ধার পরিকল্পনায় রাষ্ট্রসমূহ যাতে
‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি কাজে লাগায় সে আহ্বানও জানানো হয়েছে এবারের রেজুলেশনে।
এবছর ১০৯ টি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুলেশনকে কো-স্পন্সর করেছে, যা ‘শান্তির
সংস্কৃতি’ ধারণা এগিয়ে নিতে সমর্থন যুগিয়েছে। রেজুলেশনের প্রতি অব্যাহত সমর্থন এবং
প্রতিবছর সর্বসম্মতভাবে এটি গ্রহণ, শান্তির প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।