ঢাকা, ৮ পৌষ (২২ জানুয়ারি) :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ২৩ জানুয়ারি ‘জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস’ উপলক্ষ্যে
নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“বাংলাদেশ প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন সমিতি (বিএসটিডি) ২৬তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস এবং
সমিতির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে জেনে আমি আনন্দিত। এ আয়োজনের সঙ্গে
সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সরকার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের উন্নয়ন দর্শন ও সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে সফলভাবে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার
নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একইভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার
সবক’টি লক্ষ্য অর্জনে সমানভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ
হিসেবে বিশ্বে স্থান করে নিয়েছে। উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক
অঙ্গনে সমাদৃত।

বৈশ্বিক মহামারী করোনার ব্যাপকতার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সাল ছিল আমাদের জন্য
খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমাদের সরকার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক কার্যকর
ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এখনও আমরা করোনার সর্বগ্রাসী আঘাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে
পারিনি। ফলে করোনার ব্যাপকতার বিষয়টি সামনে রেখেই আমরা উন্নত রাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ
মোকাবিলার জন্য সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আর এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বস্তরে
দরকার দক্ষ মানবসম্পদ। সুপ্রশিক্ষিত, দক্ষ ও নিবেদিত কর্মী বাহিনী ছাড়া কোন চ্যালেঞ্জ
যথাযথভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আর চৌকশ ও পেশাদার কর্মী বাহিনী গড়ে তোলার প্রধান
মাধ্যম হলো প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।

আমরা প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে প্রশিক্ষণ সেক্টরের উন্নয়ন
ও সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সরকার যে জনপ্রশাসন নীতি
বাস্তবায়ন করছে তাতে প্রশিক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো
হয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামো উন্নয়নকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ক্যাডার অফিসারদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে সেবাধর্মী, উন্নয়নবান্ধব ও আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে
তোলার লক্ষ্যে দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণের পরিসর বাড়ানোসহ নানাবিধ সংস্কার কর্মসূচি
বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে একজন নির্বাহীর মনোবল, দক্ষতা
তথা সার্বিক মান উন্নয়ন সম্ভব; যা মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি।

বিএসটিডি দীর্ঘকাল ধরে মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।
প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা, সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণ
প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে সমন্বয়মূলক কাজ ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ আয়োজন করে রাষ্ট্রের
মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমি আশা করি, বিএসটিডি আগামী দিনেও
সরকারের ‘রুপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং মানবসম্পদ
উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য অবদান
রাখবে।

আমি ‘বাংলাদেশ প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন সমিতির ২৬তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস’ এবং
‘৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”