ঢাকা, ২০ কার্তিক( ৫ নভেম্বর) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ৬ নভেম্বর ‘জাতীয় সমবায় দিবস’
উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৫০তম জাতীয়
সমবায় দিবস উদ্যাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছর জাতীয় সমবায় দিবসের
প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি
মনে করি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা,
দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ। সমবায়কে তিনি উন্নয়নের অন্যতম
প্রায়োগিক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। সমবায় সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা ছিল
গভীর এবং ব্যাপক। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ সমবায় ইউনিয়ন আয়োজিত সমবায়
সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে,
শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে – এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে
গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বাংলাদেশের কৃষি ও অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগসহ উৎপাদিত পণ্যের
বাজারজাতকরণ ও পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিসহ নারীর ক্ষমতায়ন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর
জীবনমান উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমবায় একটি কার্যকরী পদ্ধতি। কোভিড-১৯ এর কারণে
সারাবিশ্ব বর্তমানে এক কঠিন সময় পার করছে। সমবায় পদ্ধতির পারস্পরিক সহযোগিতা,
সমবেত প্রচেষ্টা ও মূল্যবোধের চর্চা বর্তমান সংকট উত্তরণে ভূমিকা রাখতে পারে।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার সমবায় সমিতি রয়েছে। এ সকল সমবায় সমিতি শেয়ার
ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজিগঠন, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, উৎপাদন, বিপণন প্রভৃতি
কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যান্নয়নসহ সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নে
গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে নিয়েছিলেন বহুমুখী
পরিকল্পনা, দিয়েছিলেন অর্থনৈতিক নতুন ফর্মুলা। তাঁরই উদ্ভাবিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন
দর্শন বাস্তবে রূপ দিতে তিনি সমবায়ের অন্তনির্হিত শক্তিকে পুরোমাত্রায় ব্যবহার করতে
চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অর্থনৈতিক দর্শন ‘সমবায়’ এর শক্তিকে একটি গণমুখী
সমবায় আন্দোলনে পরিণত করতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আমি ৫০তম জাতীয় সমবায় দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”