ঢাকা, ১৭ পৌষ (১ জানুয়ারি) :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ২ জানুয়ারি ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২২’
উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২ জানুয়ারি ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২২’ উদযাপন করছে
জেনে আমি আনন্দিত।
এবারের প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের সফলতা, ঘরেই পাবেন সকল ভাতা’ যা প্রাসঙ্গিক ও
সময়োপযোগী।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত
বাংলাদেশ পুনর্গঠনের শুরুতেই অসহায়, অনগ্রসর মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান করেন।
১৯৭৪ সালে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি প্রবর্তন করেন, শিশু সুরক্ষা ও উন্নয়নে শিশু আইন,
১৯৭৪ প্রণয়ন করেন। জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার
সবসময়ই দেশের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। আমাদের সরকারের প্রথম মেয়াদে
(১৯৯৬-২০০১) বয়স্ক ভাতাসহ অন্যান্য ভাতার প্রচলন করি। প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ও
মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সকল খাতে বরাদ্দ ও উপকারভোগীর
সংখ্যা উভয়ই বৃদ্ধি করা হয়।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ১৩ বছরে দেশের দুস্থ, দরিদ্র, অসহায় শিশু, প্রতিবন্ধী,
কিশোর-কিশোরী, স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ও প্রবীণ ব্যক্তিসহ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণ ও
উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। বর্তমান অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৫৭.০১
লক্ষ জন, বরাদ্দ ৩ হাজার ৪৪৪.৫৪ কোটি টাকা; বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা পাচ্ছেন ২৪.৭৫
লক্ষ জন, বাজেট ১ হাজার ৪৯৫.৪০ কোটি টাকা; প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ২০.০৮ লক্ষ জন,
বাজেট ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। পাশাপাশি ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লক্ষ প্রতিবন্ধী
শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
মুজিববর্ষে আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতাভোগীদের
অর্থ জিটুপি পদ্ধতিতে হাতের মুঠোয় পৌঁছেদিব। ২০২০-২১ অর্থবছরে শতভাগ ভাতাভোগীর অর্থ
মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ও এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করে সে অঙ্গীকার
বাস্তবায়ন করেছি। আমরা চা-বাগানের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি।
হিজড়া, বেদে ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ, বিশেষভাতা ও
শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড
ও জন্মগত হৃদরোগীদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতাল সমাজসেবা
কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ চিকিৎসা সেবা ও সহায়তা পাচ্ছে। গণমানুষের
কল্যাণে প্রয়োজনীয় সকল কর্মসূচি আমরা অব্যাহত রাখব।
আমি আশা করি, দেশের দুস্থ, অসহায় ও প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত বঙ্গবন্ধুর
স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে অবদান রাখবে।
আমি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকারি-
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে একত্রে কাজ করার আহ্বান
জানাই।
আমি ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২২’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য
কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”