গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ, ১১ চৈত্র (২৫ মার্চ) :
বেকারত্ব কমাতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কারিগরি শিক্ষায় মনোনিবেশের আহ্বান
জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে
তিনি বলেন, ‘যে দেশ কারিগরি শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষায় বেশি মনোযোগ দিয়েছে সেই দেশ তত
উন্নত-সমৃদ্ধ হয়েছে। জার্মানির মতো উন্নত দেশে শতকরা ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায়
শিক্ষিত। তাই কাজের জগতের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে তারা (উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান) কারিকুলাম
ঠিক করুক। ’
মন্ত্রী আজ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ভাটের চর দেওয়ান এ মান্নান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের
সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২০২৩ সাল থেকে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু করছে সরকার।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে কারিকুলাম পরিবর্তন সরকার করলেও উচ্চশিক্ষা কারিকুলাম
পরিবর্তন করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মাধ্যমে পরিচালিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
মন্ত্রী জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে প্রয়োগিক শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ
নিয়েছে সরকার। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি
বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কারিকুলাম নিয়ে ভাবুক। তারা ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া
লিংকেজ তৈরি করুক। কাজের জগতের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে তাদের কারিকুলাম ঠিক করুক। সেই
কাজের জগতে ইন্টার্নি করার ব্যবস্থা করুক। আমাদের শিক্ষার্থীরা কর্ম-উপযোগী হয়ে বের হোক।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মডিউলার এডুকেশন ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সবার বড়
ডিগ্রি করার দরকার নেই। শিক্ষার্থীরা ছোট করে নতুন নতুন দক্ষতা শিখে নেবে। ছোট ডিপ্লোমা
করবে, কিছু সার্টিফিকেট কোর্স করবে, বড় ডিপ্লোমা করবে যার যেমন সুবিধা। শেখার জন্য সবাই
কাজের জায়গা ছেড়ে আসতে পারবে না। সে কারণে অনলাইন অফ লাইন মিলিয়ে ব্লেন্ডেড এডুকেশনে
যুক্ত হবে। আমরা সেই ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে চাইছি। ‘
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা বড় প্রবণতা আছে সব শিক্ষার্থী চায় অনার্স-মাস্টার্স
পড়তে। পৃথিবীর কোথাও এতো অনার্স মাস্টার্স পড়ে না। একটি পর্যায়ের পর অনেক শিক্ষার্থী
বৃত্তিমূলক, কারিগরি শিক্ষায় চলে যাবে। জার্মানির মতো উন্নত দেশে শতকরা ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী
কারিগরি শিক্ষায় পড়ে। যে দেশ অনেক বেশি উন্নতি করেছে, সেই দেশের অনেক শিক্ষার্থী কারিগরি
শিক্ষায় মনোনিবেশ করেছে। আর তা দিয়েই, তারা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়েছে। আমাদের সেই পথে
হাঁটতে হবে। এ কারণে আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করছি—কীভাবে
বিশ্ববিদ্যালয়গুলেতে কর্ম-উপযোগী শিক্ষা দেওয়া নিশ্চিত করা যায়। যে শিক্ষার্থী অনার্স বা
মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে বের হয়, সে যেন কাজের জগতের চাহিদা অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন করে বের
হয়। তার যেন চাকরি পেতে সমস্যা না হয়, উদ্যোক্তা হতে চাইলে উদ্যোক্তা হতে পারে। ’
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষার তিন-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের
অধীনে পড়াশোনা করে। আমরা চাইছি— যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি, বি-কম পড়বে বা
ডিগ্রি কোর্স করবে তারা আইসিটি, ভাষা, উদ্যোক্তা হওয়ার মতো কোর্স যেন পড়ে। তাছাড়া পোস্ট
গ্র্যাজুয়েট নানা বিষয়ে দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে তেমন বিষয়ে ডিপ্লোমা তারা
করতে পারে।