নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি ভূমি অফিস। হাতের ফাইলে একগাদা কাগজ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন সুমন আহমেদ। এটি তার ছদ্মনাম।

খোঁজ নিতেই জানা গেলো, সুমন আহমেদ এসেছেন তার পাঁচ শতাংশ জমির ‘খারিজ’ করতে।

কতদিন ধরে ঘুরছেন এমন প্রশ্নে মুচকি হাসেন সুমন আহমেদ।

“বেশি না মাত্র পাঁচ মাস হইছে। অনেকে তো পাঁচ বছর ধরে শুনানির জন্য ঘুরতেছে, ডেট পায় না। কিন্তু আমি ডেট পায়া গেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে খারিজ হয়ে যাবে,” সুমনের জবাব।
কীভাবে শুনানির তারিখ পেলেন এমন প্রশ্ন করতেই আবারও মুচকি হাসেন সুমন।

“টাকা দিয়া করছি” তার সরল স্বীকারোক্তি।

“শুনেন টাকা ছাড়া কী কাজ হয়? দালাল ধরলাম। ওদের ভিতরে যোগাযোগ আছে। ষাট হাজার টাকায় চুক্তি করছে। দুই মাস আগে আগে ত্রিশ হাজার টাকা দিছি। এখন কাজের গতি দ্রুত হইছে। আজকে শুনানি দিয়া দিছে। এক সপ্তাহের মধ্যে খারিজও কইরা দিবে। তখন বাকি টাকা দিয়া দিবো,” বলছিলেন সুমন আহমেদ।

নারায়ণগঞ্জের ভূমি অফিসে আর্থিক দুর্নীতির যে অভিযোগ মি. আহমেদ করছেন, সেটা অবশ্য বিরল কোনও ঘটনা নয়।

বরং বাংলাদেশের সেবাখাতগুলোতে দুর্নীতি-অনিয়মের এমন অভিযোগ বহু পুরনো।

কিন্তু বাংলাদেশে একটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যখন নুতন গঠিত অন্তর্বতীকালীন সরকার তার শততম দিন পার করেছে, তখন মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতি যে বন্ধ হয়নি, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাই তার একটা দৃষ্টান্ত।

কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই একশত দিনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঠিক কী পদক্ষেপ নিয়েছে সেটা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।

ভূক্তভোগীদের কী অভিযোগ?
নারায়ণগঞ্জের ভূমি অফিসে সুমন আহমেদ বলছেন, তার ভাষায়, দালাল আর ভূমি অফিসের কিছু লোক মিলে এমন একটা চক্র তৈরি করেছেন যে, ঘুষ না দিলে কাজ করানো অসম্ভব।

ভূমি অফিসের মূল ভবনে আরও কিছু ব্যক্তিকে পাওয়া গেলো যারা শুনানির জন্য এসেছেন।