যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সোমবার তার দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার জন্য নতুন চাপের মুখে পড়েছেন। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার পারিবারিক সম্পর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগে এই চাপ তৈরি হয়েছে।

আর্থিক এক দুর্নীতি মামলায় টিউলিপ ও তার খালাসহ শেখ পরিবারের আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হয়েছে। এতে ব্যাপক চাপে পড়েছেন টিউলিপ। সম্প্রতি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর দেয়া ফ্ল্যাটে বসবাসের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরপর তিনি নিজের বিষয়ে কেয়ার স্টারমারের মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ড অ্যাডভাইজরকে তদন্তের আহ্বান জানান। অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি কোনো ভুল করেননি।

যুক্তরাজ্যের সরকারে টিউলিপ সিদ্দিকের অবস্থান যৌক্তিক কিনা জানতে চাওয়া হলে সোমবার দেশটির জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন স্কাই নিউজকে বলেন, তিনি (টিউলিপ) নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বানের মাধ্যমে সঠিক কাজ করেছেন। মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন জোর দিয়ে বলেন, এই ধরনের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার ক্ষমতা রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড অ্যাডভাইজরের।

তবে যুক্তরাজ্যের বিরোধী রাজনীতিবিদরা চান সিদ্দিককে বরখাস্ত করা হোক। রোববার টাইমস রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কনজারভেটিভদের অর্থ মুখপাত্র মেল স্ট্রাইড বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়িত্ব পালনের জন্য আর যোগ্য নেই।

বাংলাদেশে টিউলিপ ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে। গত ডিসেম্বরে দুর্নীতির এই অভিযোগের তদন্তে যুক্ত হয় টিউলিপ সিদ্দিকের নাম। এরপর তদন্তের অংশ হিসাবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা দেশের বড় ব্যাংকগুলোকে সিদ্দিকের সাথে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিবরণ জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।

গত সপ্তাহে সানডে টাইমসের তদন্তে দাবি করা হয়েছে, টিউলিপ দুই বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর সাথে যুক্ত একটি অফশোর কোম্পানির কেনা লন্ডনের একটি ফ্ল্যাটে বছরের পর বছর বসবাস করেছিলেন। সংবাদপত্রটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফ্ল্যাটটি অবশেষে হাসিনা, তার পরিবার এবং তার ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাথে সম্পর্কিত একজন বাংলাদেশী ব্যারিস্টারকে উপহার হিসেবে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

সূত্রটি আরো জানিয়েছে, টিউলিপ ও তার পরিবারকে আওয়ামী লীগের সদস্য বা সহযোগীদের কেনা লন্ডনের আরো বেশ কয়েকটি সম্পত্তি দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস অভিযোগের আলোকে বিস্তারিত তদন্তের দাবি করেছেন। সূত্র : এএফপি