ঢাকা, ২৫ শ্রাবণ (৯ আগস্ট) :
করোনার টিকা নিয়ে বিএনপির অপপ্রচার জনস্বার্থবিরোধী প্রচারণামূলক অপরাধ বলেছেন
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
আজ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে টিকা নিয়ে
শুরু থেকে বিএনপির সমালোচনার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিকা নেয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি
মেনে চলাই করোনা মোকাবিলার এখন পর্যন্ত একমাত্র পথ। একারণে জনস্বার্থে টিকা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এই টিকার বিরুদ্ধে যখন অপপ্রচার হয় সেটা সরকারের বিরুদ্ধে নয়,
জনস্বার্থের বিরোধী। অর্থাৎ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবসহ এই টিকার বিরুদ্ধে যারা
অপপ্রচার চালাচ্ছেন তারা জনস্বার্থবিরোধী কাজ করছেন এবং জনস্বার্থবিরোধী অপপ্রচার যদি
কেউ চালায় সেটা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
টিকা দলীয়করণের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে একটা ব্রত এবং
জনগণের কল্যাণের জন্যই রাজনীতি। বিএনপির কাছে অবশ্যই তা নয়। বিএনপির রাজনীতির ব্রত
হচ্ছে ভিন্ন। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে দেখা দেয়ার পর থেকে দলের
সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তাতে আওয়ামী লীগের জাতীয় সংসদ সদস্য
থেকে শুরু করে একেবারে ওয়ার্ড লেভেলের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে থেকেছে। দলের পক্ষ থেকে
২ কোটির বেশি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৫জন
সদস্যসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।
আওয়ামী লীগের ১৩০ জনের বেশি সংসদ সদস্য, মন্ত্রিসভার এক তৃতীয়াংশের বেশি সদস্য
করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে। এগুলো জনগণের পাশে থাকতে গিয়ে হয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, এখন জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েই টিকা নেয়া যাবে। কিন্তু আগে নিবন্ধন
করতে হতো। গ্রামের মানুষ নিবন্ধন করতে জানে না। সেক্ষেত্রে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা
নির্দেশ মাফিক জনগণকে নিবন্ধন কার্যক্রমে সহায়তা করেছে। এখানে কি দোষ দেখল বিএনপি!
তারাও তো এই কাজটি করতে পারতো।
মন্ত্রী বলেন, টিকা সার্বজনীনভাবে দেয়া হচ্ছে। এখানে কে কোন দল বা মতের সেটি দেখা
হচ্ছে না। সরকার স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে এই টিকা দিচ্ছে। সেখানে কোনো দলকে কোনোভাবেই
সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা টিকা দিচ্ছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা
দেয়া হয়েছে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য, যাতে টিকা নেয়। মির্জা ফখরুল সাহেবের কাছে আমার
প্রশ্ন, এটি কি গর্হিত কাজ? তারা তো জনগণকে উদ্বুদ্ধ না করে বরং জনগণ যাতে টিকা না নেয়
সেই অপপ্রচার চালাচ্ছেন যেটি জনস্বার্থের বিরুদ্ধে।
লকডাউন তুলে দেয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ক্রমাগতভাবে লকডাউন
কখনই সমাধান নয়। আমাদের খেটে খাওয়া মানুষের এই দেশে জীবন এবং জীবিকার মধ্যে সমন্বয়
ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এখন যেটি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, সেটি হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা
এবং মাস্ক না পরলে যাতে সহজে জরিমানা করা যায় সেটিও সরকার ভাবছে। স্কুল-কলেজ এখনই
খুলছে না এবং এর পাশাপাশি গণটিকা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকাতেও করোনা
আছে কিন্তু এরপরও জীবন স্বাভাবিক করার জন্য সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে।