ঢাকা, ১৩ আষাঢ় – ২৭ জুন/২০২১/২২২৩ ঘণ্টা
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির
ফলে দেশের ব্যাংকিং লেনদেনে বিস্ময়কর পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিং তৃণমূল
মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ক্রমেই ক্যাশলেস সোস্যাইটির
দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে যতবেশি ডিজিটাল হবো নিরাপত্তার হুমকি ততবেশি থাকবে। এই ব্যাপারে
গ্রাহকদের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি তৎপর
হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ঘরে বসে অগ্রণী ব্যাংকের অগ্রণী ই-একাউন্ট মোবাইল অ্যাপ এর
মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য উদ্ভাবিত অ্যাপ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অগ্রণী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মফিজ উদ্দিন আহমেদ, কাশেম
হুমায়ুন, ড. মোঃ ফরজ আলী, কেএমএন ফজলুল হক লাবলু এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও
সিইও মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমরা তৃতীয় শিল্প বিপ্লব বা ইন্টারনেটভিত্তিক
শিল্প বিপ্লবের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে। সামনের পথ অনেক বড়। প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন
আনবে ব্যাংকিং খাতে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং বা সেবা ধর্মী প্রতিষ্ঠানের জন্য সবচেয়ে বড় গুরুত্ব
হচ্ছে গ্রাহক। গ্রাহক সেবায় আপস করা চলবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নিজস্ব আইটি
টিমের মাধ্যমে অগ্রণী ব্যাংক ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসে একাউন্ট খোলার অ্যাপস তৈরি করে
নতুন দিনে পা দিলো। অন্যদের জন্য এটি অনুকরণীয় উল্লেখ করে বলেন, অন্যের ওপর নির্ভরতা
নয় প্রতিটি আর্থিক খাতে নিজস্ব শক্তিশালী আইটি টিম গড়ে তোলা দরকার। কম্পিউটার বিপ্লবের
অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ধারাবাহিকতা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধের ধ্বংসের ওপর দাঁড়িয়েও সোনার বাংলা
প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করে গেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার
নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন, টিএন্ডটি বোর্ড
প্রতিষ্ঠা এবং আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্য পদ গ্রহণ এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়
করণের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ এবং কম্পিউটারের ওপর থেকে
ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার করে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ
করেন। গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে বাংলাদেশে ডিজিটাল
অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও আজকের বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প
বিপ্লবে অংশ গ্রহণের জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি। করোনাকালেও ব্যবসা-শিল্প-অফিস, সভা,
সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা অনলাইনে চলছে। প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েরাও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার
করে ঘরের রান্না খাবারও গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
এর আগে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর আইডি কার্ডসহ বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত
দিয়ে অগ্রণী ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলার মধ্য দিয়ে এই পদ্ধতির যাত্রা শুরু করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা অগ্রণী ব্যাংকের অগ্রগতির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন।