ঢাকা, ২৫ আশ্বিন (১০ অক্টোবর) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা
উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে জানাই আন্তরিক
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সারাদেশে যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে দুর্গাপূজা উদযাপিত
হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার সাথে মিশে আছে
চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। আবহমানকাল ধরে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল
উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দুর্গাপূজা
উদ্যাপন করে আসছে। দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, সামাজিক উৎসবও।
দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-
পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশী একত্রিত হন, মিলিত হন আনন্দ-উৎসবে। তাই এ উৎসব
সার্বজনীন। এ সার্বজনীনতা প্রমাণ করে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ধর্মীয় উৎসবের
পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে
উঠুক; ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরো সুসংহত
হোক – এ কামনা করি।
মানবতাই ধর্মের শাশ্বত বাণী। ধর্ম মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথে আহ্বান করে,
অন্যায় ও অসত্য থেকে দূরে রাখে, দেখায় মুক্তির পথ। তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার
পাশাপাশি আমাদেরকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব আজ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চরমভাবে বিপর্যস্ত। মহামারি করোনার প্রভাবে গোটা বিশ্বের
অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত ও
সাহসী পদক্ষেপের ফলে সরকার করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধরে
রাখতে সক্ষম হয়েছে। জনগণের জন্য কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন প্রদানেরও ব্যবস্থা করা
হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে দেশের সকল নাগরিককে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার কার্যক্রম
চলছে। আমি কঠিন এ সময়ে পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের
পাশে দাঁড়ানোর জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আশা করি,
সকলে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারদীয় দুর্গোৎসবে শামিল হবেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে
এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায়। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋদ্ধ
অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের
সোনার বাংলা গড়তে উদ্বুদ্ধ করুক, বিশ্ব মানবতার জয় হোক – এ প্রত্যাশা করি।
শারদীয় দুর্গোৎসব সফল হোক।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”