ঢাকা, ১ ভাদ্র (১৬ আগস্ট) :
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চীন বাংলাদেশের
পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চীন সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে বন্ধুর
মতো হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আজকের চীন-বাংলাদেশ ভ্যাকসিন চুক্তির মাধ্যমে দেশে
ভ্যাকসিনের ঘাটতি মেটাতে চীন আরেকবার তার বন্ধুত্বের গভীরতা প্রমাণ করেছে। এই
চুক্তি দেশের জন্য এক বিরাট মাইলফলক হয়ে থাকবে। দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের
আওতায় আনতে আজকের এই চুক্তি বিরাট ভূমিকা পালন করবে এবং দেশে আর কোন
ভ্যাকসিন ঘাটতি থাকবে না। তবে ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম পুরোপুরি শুরুর আগ
পর্যন্ত বাংলাদেশ চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশের কাছ
থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ কাজ চলমান রাখবে।
আজ রাজধানীর মহাখালীর বিসিপিএস অডিটোরিয়াম হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
আয়োজিত চীনের সিনোফার্ম ভ্যাকসিন যৌথভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে সিনোফার্ম, স্বাস্থ্য
ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ খুব তাড়াতাড়ি দেশেই ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম শুরু
করতে পারবে বলে জানান মন্ত্রী। ভ্যাকসিনের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে এসময় মন্ত্রী
আরো জানান, দেশে এ পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রায় ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন চলে
এসেছে। যা থেকে ১ম ধাপে দেড় কোটি ডোজ এবং ২য় ধাপে ৫৪ লাখ ডোজ মানুষ গ্রহণ
করেছে। অবশিষ্ট ১ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন এই মুহুর্তে দেশে মজুত আছে। এ মাসের ২২
তারিখের পর চীন থেকে সিনোফার্মের আরো ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। চীনের
পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকেও আরো ভ্যাকসিন নেয়া হবে। সুতরাং ভ্যাকসিন নিয়ে আগামীতে
আরো কোন ঘাটতিতে থাকবে না বাংলাদেশ।
দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার অর্থ হচ্ছে ১৩ কোটি মানুষের জন্য মোট
২৬ কোটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত রাখতে হবে। এই বিশাল সংখ্যক ভ্যাকসিন চাহিদা পূরণ করতে
চীনের সাথে বাংলাদেশের আজকের এই চুক্তিটি অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলেও মন্ত্রী তার
বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনের সাথে
চুক্তিসহ কোভিড মোকাবিলায় সকল কাজে নেতৃত্ব দেবার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করেন ও ধন্যবাদ জানান।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় গেস্ট অভ্
অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, চীনের সাথে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করতে সরকার দিনরাত নিরলস কাজ
করেছে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। এই চুক্তির ফলে এখন থেকে বাংলাদেশেই কোভিড

ভ্যাকসিন উৎপাদন হবে এবং খুব দ্রুতই দেশে মানুষের আবারও স¦াভাবিক জীবনযাত্রা শুরু
হবে।
অনুষ্ঠানে চীনের সিনোফার্ম ভ্যাকসিন বাংলাদেশ যৌথভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে
সিনোফার্ম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ইনসেপ্টা ভ্যাকসিনের পক্ষ
থেকে যথাক্রমে সমঝোতা স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ
মালেক, চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এবং ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড ও ইনসেপ্টা
ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মুক্তাদির।