১৫ জুলাই ২০২৩
দেশে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম উপায়ে উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটালো দিনাজপুর হাবিপ্রবি’র জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিং বিভাগ।
এর মধ্যদিয়ে দেশে নতুন একটি সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদেশ থেকে এই উটপাখির বাচ্চা সংগ্রহ করা ছিল বেশ ব্যয়বহুল। তবে দেশে উটপাখির বাচ্চা উৎপাদন হলে আর্থিক সাশ্রয়ের পাশাপাশি আমিষের ঘাটতি পূরণে সৃষ্টি হবে নতুন মাত্রা।
উটপাখির ডিম থেকে ইনকিউবেটরের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা ফোটালো দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিং বিভাগের গবেষকরা।
এই অঞ্চলের জন্য উপযোগী কিনা সেটি পরীক্ষার জন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৫ সালে দুই দফায় ১৯টি উটপাখির বাচ্চা সাউথ আফ্রিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতায় খামারের ৮টি বাচ্চা মারা যায়। গত দুই বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের খামারে রেখে ১১টি উটপাখির ওপর বিস্তর গবেষণা শুরু করে গবেষক দলটি।
দীর্ঘদিনের অবসান শেষে সম্প্রতি ইনকিউবেটরে ১২টি ডিম ৪০দিন দিন রাখার পর একটি থেকে সুস্থ সবল বাচ্চা বেড়িয়ে আসে। এরই মধ্য দিয়ে পল্ট্রি শিল্পে নতুন একটি সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন হলো। বিভিন্ন দেশে উটপাখির বড় বড় খামার থাকলেও বাংলাদেশে বাচ্চা ফোটানোর প্রক্রিয়া না থাকায় এই পাখি পালন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় খামারিরা।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমন একটি গবেষণার অংশ হিসেবে থাকতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছেন। পাশাপাশি এই খবর শুনে খামারিরাও দেখছেন নতুন স্বপ্ন।
ওই বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান ও সামিউল হক বলেন, গবেষণার প্রায় শুরু থেকে স্যারদের সঙ্গে কাজ করছি। বিশাল একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা পেরেছি। তবে এমন গবেষণায় সরকারি পৃষ্ঠপোষোকতা খুব জরুরি।
জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, উটপাখির বাচ্চাটি এখন সুস্থ ও সবল রয়েছে এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এই বাচ্চা উৎপাদন বৃদ্ধি করে খামারিদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে এবং দেশে আমিষের চাহিদা পূরণেও অংশিদার হবে।
হাবিপ্রবি’র ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উম্মে সালমা জানান, উটপাখির ডিম নিয়ে এর আগেও অনেক গবেষণা হয়েছে। তবে দেশে প্রথমবারের মতো হাবিপ্রবি’র এই বিভাগটি দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গবেষণাটি আলোর মুখ দেখলো।
বিদেশ থেকে মাত্র ৭দিনের এক জোড়া উটপাখির বাচ্চা দেশে আনতে খরচ হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।