এস এম মিলন, নড়াইল, ২৩ অগ্রহায়ণ (৮ ডিসেম্বর) :
আজ লোহাগড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে (৮ ডিসেম্বর) লোহাগড়ার মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানাকে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত করেন। হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলদান, পতাকা উত্তোলন, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, দোয়া অনুষ্ঠান ও শহীদদের কবর জিয়ারতের আয়োজন করা হয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ বলেন, নভেম্বরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা সমগ্র উত্তরাঞ্চল শত্রুমুক্ত করেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার লক্ষ্মীপাশায় অবস্থিত থানা আক্রমণের চূড়ান্ত পরিকল্পনা নেন। ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ ইউনুস আলী, মুজিব বাহিনীর প্রধান শরীফ খসরুজ্জামান, আবুল হোসেন খোকন, কবির হোসেন ও শেখ আ. রউফ এর নেতৃত্বে দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গেরিলা কায়দায় পশ্চিম দিক দিয়ে থানা আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিকল্পিত আক্রমণে হতচকিয়ে পড়ে পাক বাহিনীর রেঞ্জার সদস্যরা। এ সময় থানায় অবস্থানরত রেঞ্জার বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র ও গোলাবারুদ ফেলে থানার পূর্ব দিক দিয়ে পালিয়ে যান। শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধা ও পাক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ।
আব্দুল হামিদ আরও বলেন, থানা আক্রমণের সময় মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করে কুখ্যাত রাজাকার ও পুলিশ সদস্য খালেক ও নড়াইলের আশরাফ রাজাকারসহ প্রায় ২০ জনকে হত্যা করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে গ্রেপ্তার হয় ১০ পুলিশ সদস্যসহ ২২ জন রাজাকার। মুক্তিযোদ্ধারা বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে নিজেদের আয়ত্তে আনেন। এরপর ৮ ডিসেম্বর সারা দিনই লোহাগড়া থানার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা ও সাধারণ জনতা বিজয় মিছিল করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শামসুল আলম কচি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে লোহাগড়ায় ১১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। অথচ উপজেলায় তাঁদের স্মরণে এখন পর্যন্ত কোনো সৌধ বা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। তাঁর দাবি, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত লোহাগড়া আজও অরক্ষিত ও অবহেলিত।