ঢাকা, ২৮ অগ্রহায়ণ (১৩ ডিসেম্বর) :
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, “চলমান করোনার কারণে দেশের বহুসংখ্যক মানুষেরই নানারকম মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দেশে আত্মহত্যার হারও কম নয়। উন্নত বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মানসিক স্বাস্থ্য খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। আমাদের দেশে সামাজিক নানারকম অপপ্রথা থাকায় সহজে কেউ মানসিক চিকিৎসকের কাছে যেতে চায় না। তবে, মানসিক বিষয়টিকে সরকার আর হালকাভাবে নিচ্ছে না। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেই আমরা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি দেশের সব জেলাতেই একটি করে আলাদা মানসিক স্বাস্থ্য ইউনিট করা হবে।”
মন্ত্রী আজ রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এ সময় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে যদি সবাই নিজ থেকে সতর্ক না হয়, তাহলে এটিকে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে, কিন্তু ওমিক্রনে আক্রান্ত দেশগুলোতে প্রতিনিয়ত লোকজন আসা যাওয়া করছে। এই আসা যাওয়ার কারণেই আমাদের ভয় হচ্ছে।
দু’জন নারী ক্রিকেটারের দেহে ওমিক্রন থাকা নিয়ে মন্ত্রী এ সময় আরো বলেন, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল জিম্বাবুয়েতে গিয়েছিল, সেখান থেকে আসার পর তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। তারপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দু’জনের দেহে ওমিক্রন পেয়েছি। তারা উভয়েই সুস্থ আছেন। এখন পর্যন্ত তাদের মাধ্যমে অন্য কারো দেহে ওমিক্রন ছড়ায়নি।
ওমিক্রন নিয়ে এখন সবাইকে আরো সচেতন থাকতে বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ হলো আমাদের দেশের অনেক মানুষ বিদেশে আসা-যাওয়া করছে। ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়া ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ আমাদের দেশে আসছে। কাজেই আমরা যদি নিজেরা সতর্ক না হই, তাহলে ওমিক্রন ঠেকিয়ে রাখা খুবই কঠিন।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। করোনা হাসপাতাল যেগুলো ছিল, সেগুলোকে যেভাবে আমরা প্রস্তুত করেছিলাম, সেগুলো সে অবস্থাতেই আছে। বরং ওমিক্রন মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে আপগ্রেড করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের টিকা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। ৩০ কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহ করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ৪ কোটি ডোজ হাতে মজুত আছে।
বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা বুস্টার ডোজের বিষয়ে কাজকর্ম করছি। ষাটোর্ধ্ব ও ফ্রন্টলাইনারদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে। বুস্টার শুরুর আগে আমাদের সংখ্যাটি নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়াও আরো কিছু কাজকর্ম আছে। এই মুহূর্তে আমরা সুরক্ষা অ্যাপটিকে আপগ্রেডের কাজ করছি।স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বার্ধন জং রানা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।