দেশে নতুন জুয়েলারি কারখানা স্থাপন ও পুরাতন কারখানাগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন এবং রপ্তানিমুখি খাত হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী ৪ জুলাই শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪। দেশের ঐতিহ্যবাহী ও পণ্যভিত্তিক সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন-বাজুস ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেস যৌথভাবে আয়োজিত
এই প্রর্দশনীর প্রতিপাদ্য বিষয় ‘গহনায় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়া’।
রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা’র (আইসিসিবি) হল- ২, পুষ্পগুচ্ছে এই বিটুবি প্রর্দশনী চলবে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত প্রর্দশনীটি ব্যবসায়ী দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত। প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪’ এ অংশ নিচ্ছে ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ১০ দেশের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান।
এ প্রসঙ্গে বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বলেন- উন্নত বিশে^র সঙ্গে এগিয়ে যেতে, দেশের পশ্চাৎপদ জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়ন সবার আগে জরুরি। সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে নতুন বিনিয়োগকারিদের নীতি সহায়তা দিতে হবে। এই শিল্পে নতুন প্রযুক্তি সংযোজনে উদ্যোক্তাদের পাশে সহায়তার হাত নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়ন হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়বে। নতুন নতুন কারখানা স্থাপনে বিনিয়োগকারিরা এগিয়ে আসবেন। রপ্তানিমুখি শিল্প হিসেবেও গড়ে উঠবে জুয়েলারি শিল্প।
বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর আশা প্রকাশ করে বলেন- প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪ দেশীয় জুয়েলারি শিল্পকে সমৃদ্ধশালী করার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে একটি নতুন অবস্থান তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এই প্রদর্শনীর ফলে বিশ্বের আধুনিক মেশিনারিজের সঙ্গে এই খাতের ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ঘটবে। এদেশে জুয়েলারি শিল্পের হারানো ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে আনতে ও আমাদের দেশের কারিগরদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ডিজাইনের গহনা তৈরিতে আগ্রহ বাড়বে। দেশীয় কারিগরদের নিপুন হাতে গড়া নিত্য নতুন আধুনিক ডিজাইনের অলংকারের পরিচিতি বাড়বে।
সায়েম সোবহান আনভীর আরও মনে করেন- বিশ্বব্যাপি প্রতিযোগিতা করতে হলে অবশ্যই আমাদের নতুন নতুন ডিজাইন করতে হবে। সোনা রপ্তানি করতে হলে আমাদের প্রযুক্তিকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দেশে যতবেশি কারখানা তৈরি হবে, ততো বেশি বিকাশিত হবে জুয়েলারি শিল্প। আমাদের প্রধান লক্ষ্য দেশিয় জুয়েলারি শিল্পকে নিজ পায়ে দাঁড় করিয়ে বিশ^বাজারে রপ্তানির নতুন দিগন্ত উম্মোচন করা। আর এটা শুধু হাতে তৈরি গহনা দিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব না। রপ্তানি করতে হলে অবশ্যই মেশিনের তৈরি গহনাও জরুরি।
এই প্রর্দশনীর আয়োজন সহযোগি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেস’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রান্তি নাগভেকার বলেন, সৌদি আরব, দুবাই, ভারতের পর বাংলাদেশে আমরা এই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪ আয়োজন করতে যাচ্ছি। পৃথিবীর যে প্রান্তেই আমরা গিয়েছি- সেখানে বাংলাদেশের কারিগদের হাতের কাজের সুনাম পেয়েছি। এই কারিগরদের হাতে যদি মেশিন যুক্ত হয়, তাহলে বিশ^জয় করবে বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন-বাজুস ও কেএনসি সার্ভিসেস যৌথভাবে আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪’এ এবার অংশ নিচ্ছে বিশ্বের প্রায় ১০ দেশের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে অংশ নিচ্ছে ভারতের ৬ টি প্রতিষ্ঠান-তিশ্য সিএনসি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, নিও ইন্সট্রমেন্ট, সোলাংকি মেশিনারিজ ওয়ার্কস, ইরা কর্পোরেশন, কোয়ান্টাম ইকুইপমেন্ট ও অ্যাকজেট সলিউশন, প্যাসিও ট্রেডার্স প্রাইভেট লিমিটেড । ইতালির ২টি প্রতিষ্ঠান জেটিই ও ফাষ্টি, তুরস্কের ২টি প্রতিষ্ঠান ওটেক ও গুভেনিস, জার্মানির ফিশার, চীনের ডু ইট ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড, বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে ৫টি প্রতিষ্ঠান ড্রিমজ ইন্সট্রুমেন্ট টেকনোলজী, রাজঐশ্বরী, এক্সপার্ট ইন্সট্রুমেন্ট, ট্রাস্ট ইন্সট্রুমেন্ট বাংলাদেশ ও র্যার্টস বিডি ।