গাজায় বুধবার (১৯ মার্চ) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রায় ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গত দুই দিন ব্যাপক বিমান হামলার পরে এবার স্থল অভিযান শুরু করেছে। গাজায় আলজাজিরার সংবাদদাতা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গাজায় নতুন করে আক্রমণের ফলে জানুয়ারি থেকে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তির সমাপ্তি ঘটেছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সেনারা নেতজারিম করিডরে প্রবেশ করেছে, যা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণকে বিভক্ত করে। তারা গাজায় উত্তর ও দক্ষিণে স্থল তৎপরতা শুরু করেছে।

বিবিসি দেখেছে, উত্তর গাজার বেইত হানুনসহ সামরিক বাহিনী যেসব এলাকায় যাচ্ছে, সেখানে স্থানান্তরের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। গাজার বাসিন্দাদের স্থল সীমান্তের তিন পাশের বিশাল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য অসংখ্য নির্দেশ জারি করেছে তারা।

এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে শিগগিরই আরো বড় স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।
এই নির্দেশ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, যাদের অনেকেই যুদ্ধের কারণে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন এবং যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পায়ে হেঁটে, গাড়িতে বা যানবাহনে করে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ১৮৩ শিশুসহ কমপক্ষে ৪৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেইর আল-বালাহে তাদের কম্পাউন্ডে বিস্ফোরণের পর তাদের একজন কর্মীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহ সতর্ক করে দিয়েছেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র যুদ্ধ শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েল আরো বড় আকারে লড়তে পারে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হামাস আমাদের বাহিনীর সক্ষমতা বুঝতে পেরেছে এবং এটা কেবল শুরু।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।

আমাদের সব জিম্মিকে মুক্তি, হামাসকে নির্মূল করা এবং গাজা আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে না— এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘পুরোপুরি যুদ্ধ শুরু করেছে এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতির আলোচনা এখন আগুনের মুখে হবে।’ আজ বুধবারও বিমান হামলা অব্যাহত আছে।

বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করে সেখানে আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনো ৫৯ জিম্মিকে ধরে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাটজ বলেন, যদি কোনো দাবিই পূরণ না হয়, তবে বিকল্প হবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ধ্বংসযজ্ঞ’।

সোর্স: বিবিসি