ঢাকা, ২২ শ্রাবণ (৬ আগস্ট):
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা
অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিটি পদক্ষেপ ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতির পিতার নেপথ্য শক্তি, সাহস
ও বিচক্ষণ পরামর্শক হয়ে আছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তাঁর ৯১ তম
জন্মবার্ষিকীতে পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক এবং
অসচ্ছল নারীদের দেয়া হবে নগদ অর্থ ও সেলাই মেশিন।
প্রতিমন্ত্রী আজ ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সম্মেলন কক্ষে ‘আগামী ৮ আগস্ট
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম
ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক’ প্রদান উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ আগস্ট সকাল ১০.৩০ টায় গণভবন থেকে
অনলাইনে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯১তম
জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন।
প্রতিমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশপ্রেম, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাহসিকতা, ত্যাগ
ও অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর জন্মদিবসকে সরকার ৮ আগস্ট
‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস ঘোষণা করেছে। বঙ্গমাতার অবদান চিরস্মরণীয় করার লক্ষ্যে এ বছর
থেকে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ক’ শ্রেণীভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম
ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক প্রদান করা হবে। এ অনুষ্ঠানে এবছরই প্রথম ‘স্বাধীনতা ও
মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, গবেষণা, কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন এবং রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের
স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে এ পদক প্রদান করা হবে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মমতাজ বেগম (মরণোত্তর); শিক্ষা, সংস্কৃতি ও
ক্রীড়ায় টাঙ্গাইলের জয়া পতি (মরণোত্তর); ‘কৃষি ও পল্লিউন্নয়নে’ পাবনার কৃষি উদ্যোক্তা
মোছাঃ নুরুন্নাহার বেগম; ‘রাজনীতিতে’ কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ জোবেদা খাতুন পারুল
এবং গবেষণায়’ নেত্রকোনার লেখক ও গবেষক নাদিরা জাহান- (সুরমা জাহিদ) কে এ পদক প্রদান
করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পদক প্রাপ্তদের
প্রত্যেককে ক্যারেট মানের ৪০ গ্রাম সোনার নির্মিত পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার
চেক এবং সম্মাননা পত্র তুলে দেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে
বঙ্গমাতার ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত
সুবিধাভোগীদের তালিকা অনুযায়ী ৬৪ জেলায় চার হাজার অসচ্ছল নারীকে সেলাই মেশিন ও মোবাইল
ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দুই হাজার নারীকে প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা করে মোট ৪০ লাখ নগদ
অর্থ প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন অনলাইনে বঙ্গমাতার জন্মস্থান
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নগদ অর্থ ও সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন
করবেন।
সংবাদ সম্মেলন প্রতিমন্ত্রী জানান, এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গমাতা, সংকটে সংগ্রামে
নির্ভীক সহযাত্রী’। অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড় সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। বিদেশে

অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহ বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করবে।
এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গমাতার সংগ্রামী জীবন, আত্মত্যাগ, সাহসিকতা,
দেশপ্রেম, মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অপরিসীম অবদান এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অজানা তথ্য
জানতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়ভাবে ক্রোড়পত্র ও পোস্টার
প্রকাশ করা হবে। মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও
স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি
সম্প্রচার করবে। বিটিভির মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ সরাসরি সম্প্রচার করবে।
তাৎপর্য তুলে বঙ্গমাতার কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। গুরুত্বপূর্ণ
সড়কে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: সায়েদুল ইসলাম, জাতীয়
মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম
চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বেগম
মাকসুরা নূর প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।