ঢাকা, ১৬ অগ্রহায়ণ ( ১ ডিসেম্বর) :

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তির মাধ্যমে দেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে
জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
ইনসিনারেশন পদ্ধতি অর্থাৎ বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা
প্রয়োজন হবে তা সরবরাহ করলে শহরে ময়লার সমস্যা থাকবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আজ রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আমিন বাজারে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট
ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমানের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ
সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র
মোঃ আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং
বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়নার রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

মন্ত্রী বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই বিদ্যুৎ
উৎপাদন করা হচ্ছে। কার্যক্রম শুরু হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে চীনা
কোম্পানি। এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো
বলেন, চীনা কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্ল্যান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। সিটি
করপোরেশন প্রয়োজনীয় জমি ও নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে। আর উৎপাদিত বিদ্যুৎ
ক্রয় করবে বিদ্যুৎ বিভাগ। মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, শুধু ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন
নয় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সিটি
কর্পোরেশন, বিভাগীয় ও জেলা শহর এমনকি পৌরসভাগুলোতেও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ
উৎপাদনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মন্ত্রী আরো জানান, যেসব বিভাগীয় বা জেলা শহর অথবা পৌরসভা প্রতিদিন ৬’শ টন
ময়লা আবর্জনা সরবরাহ করতে পারবে তারা বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে সরাসরি
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন যেতে পারবে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম
শুরু করার কথা উল্লেখ করে মোঃ তাজুল ইসলাম জানান থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ
বিভিন্ন দেশ সফরে গিয়ে সেসব দেশের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া
পর্যবেক্ষণ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, জাপান এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে মডেল
অনুসরণ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে তার চেয়ে বাংলাদেশের জন্য ইনসিনারেশন অর্থাৎ
বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন পদ্ধতি সর্বোত্তম। এই পদ্ধতিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতিহয় না।

তাই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়কে ম্লান ও অর্থহীন করতে এবং বাংলার মানুষ যাতে
স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী এ বিষয়ে
সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

পরে, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং চায়না
মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মতো উৎপন্ন করতে যাচ্ছে সরকার। ঢাকা উত্তর সিটি
করপোরেশনের আওতাধীন আমিন বাজার এলাকায় চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন
৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে। ব্যয় হবে প্রায়
১৫ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। প্রতিদিন তিন হাজার টন বর্জ্য লাগবে। প্রতি কিলোওয়াট
বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৮ দশমিক ২৯৫ টাকা ।