ঢাকা, ৫ মাঘ (১৯ জানুয়ারি) :

চালের দাম শীঘ্রই স্থিতিশীল হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের
প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বর্তমানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিকট
খাদ্যের মজুত আছে ২০ লাখ টন, যা যেকোন সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস
শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। এদিকে এপ্রিল মাসেই নতুন চাল বাজারে আসবে। ফলে, চালের দাম
শিগগিরই স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক হবে।

আজ ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কৃষি ও খাদ্য
মন্ত্রণালয়ের সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে
মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল
ইসলাম, খাদ্যসচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম উপস্থিত ছিলেন।

চালের দাম বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি দেশে চালের দাম কিছুটা
অস্থিতিশীল ও ঊর্ধ্বমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারেও খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি
পেয়েছে। যে গমের দাম ২৩০-২৮০ ডলারের মধ্যে ছিল, তা বেড়ে এখন ৪৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে গম আমদানি হয়েছিল ৪৮ লাখ টন, আর এ অর্থবছরে জানুয়ারি
পর্যন্ত আমদানি হয়েছে মাত্র ১৬ লাখ টন। দাম বাড়ার কারণে গম আমদানি কম হচ্ছে। ফলে
আটা,ময়দার দাম চালের চেয়ে বেশি, অথচ সবসময়ই আটার দাম চালের চেয়ে কম থাকে। এছাড়া,
দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবছর ২২-২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। অ্যানিমেল ফিড
হিসেবেও চালের কিছু ব্যবহার হচ্ছে। এসব মিলে চালের চাহিদা ও কনজামশন বেড়েছে। তবে এই
মুহুর্তে দেশে খাদ্যের কোন সংকট নেই, ভবিষ্যতেও হবে না।

মন্ত্রী বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে যে ফসল কৃষকেরা ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন, ঢাকায় এসে
সেই ফসলের দাম ৪০-৪৫ কেজি কেন হবে? মধ্যস্বত্ত্বভোগী, ফড়িয়া সারা পৃথিবীতেই আছে,
কিন্তু এত দামের ফারাক হবে কেন? পরিবহণে চাঁদাবাজিসহ অনেক অপ্রত্যাশিত খরচ আছে। একটি
ট্র্যাকের মাঠ পর্যায় থেকে ঢাকা পৌঁছানো পর্যন্ত কত খরচ হয়? কোথায় কোথায় খরচ হয়? তা
খুঁজে বের করতে জেলা প্রশাসক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও কৃষি মন্ত্রণালয় মিলে স্টাডি করবে।
স্টাডির মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা নিরসনে জাতীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
এসময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলা
পর্যায়ে এক হাজার ৭৬০ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসে চাল ও আটা বিক্রি শুরু হবে। চাল ৩০
টাকা কেজি ও আটা ১৮ টাকা কেজিতে দেয়া হবে। যদিও সরকারিভাবে এ চালের আমদানি খরচ ৩৬-

৩৭ টাকা। তিনি বলেন, চালের মজুত সর্বকালের সর্ববৃহৎ। খাবার অনুপযোগী চাল গোডাউনে নেই।
মজুতকৃত চাল মানসম্পন্ন।

খাদ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ওএমএস যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য জেলা
প্রশাসকদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে মনিটরিং টিম গঠন করা
হয়েছে, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিম গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া, অবৈধ মজুতদার
চিহ্নিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও জরিমানা করার জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।