নিউইয়র্ক, ২ মার্চ :

বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যাদি জাতিসংঘে পেশ
করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

গতকাল জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ২১ সদস্যের কমিশন অন দ্য লিমিটস অভ দ্য কন্টিনেন্টাল
শেল্ফ (সিএলসিএস) এর ৫৪তম অধিবেশনে বাংলাদেশের মহীসোপানের বিস্তারিত হালনাগাদ তথ্য
উপস্থাপন করা হয়। এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব ও
প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোঃ খুরশেদ আলমসহ এ সংক্রান্ত কমিটির কারিগরি বিশেষজ্ঞগণ
উপস্থিত ছিলেন।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ যেখানে সম্পদের অভাব
রয়েছে। বাংলাদেশের মহীসোপান সীমার বিষয়ে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ বিশাল সমুদ্র এলাকার
সকল প্রাণযুক্ত ও প্রাণহীন প্রাকৃতিক সম্পদের অন্বেষণ, সংরক্ষণ ও উন্নয়নে একটি ভিত্তি
প্রদান করবে। আমাদের টেকসই উন্নয়ন, শক্তির চাহিদা ও আমাদের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত
করতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।

ড. মোমেন আরো বলেন, মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত এই উপস্থাপন আমাদের দেশের জন্য
একটি বড় অর্জন, বিশেষ করে এমন একটি সময়ে আমরা এটি সম্পন্ন করতে পারলাম যখন আমরা
২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার পথে সামনে এগিয়ে চলেছি। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের
লালিত স্বপ্ন। আগামী দিনগুলোতে এই মহীসোপান এলাকার প্রাণযুক্ত ও প্রাণহীন প্রাকৃতিক
সম্পদপ্রাচুর্য উন্মোচনে আমাদের পূর্ণ সামর্থ্যের ব্যবহার এ পথচলায় সবচেয়ে বড় পাথেয় হয়ে
থাকবে।

এই উপস্থাপনার মাধ্যমে, বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত
মহীসোপানে তার অধিকার রক্ষা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত তথ্য
সরবরাহ করেছে। এরপর সিএলসিএস এর নিয়ম অনুযায়ী, এ উদ্দেশ্যে গঠিত একটি সাব-কমিশন
বাংলাদেশ উপস্থাপিত দলিলাদি পরীক্ষা করে বাংলাদেশের মালিকানার বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করবে।
এর ফলে বাংলাদেশ ঐ এলাকায় প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করতে পারবে। আন্তর্জাতিক
ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালের দাখিল পুনরায় পর্যালোচনা
করে গত ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর সিএলসিএস এর কাছে বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত
দলিলাদির নতুন সংস্করণ পেশ করে। এই সংশোধিত দাখিলে ট্রাইব্যুনাল নির্ধারিত বঙ্গোপসাগরের
মহীসোপানের নতুন সীমারেখা অনুসরণ করা হয়।

বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত দলিলাদি ২০১১ সালের ফ্রেবুয়ারি মাসে প্রথমবারের
মতো সিএলসিএস-এ জমা দেয়া হয়। তবে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে অমীমাংসিত সমুদ্রসীমাজনিত
বিরোধের কারণে, কমিশন বাংলাদেশ দাখিলকৃত দলিলাদি সেসময় পরীক্ষা করতে পারেনি। পরবর্তীতে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিচারিক সংস্থার মাধ্যমে মিয়ানমার
ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধের সমাধান করে।