নিউইয়র্ক, ২ ফেব্রুয়ারি :
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা
সর্বসম্মতিক্রমে ২০২২ সালের জন্য জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সভাপতি
নির্বাচিত হয়েছেন। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা হলেন পিবিসির প্রথম নারী সভাপতি। নিউইয়র্কস্থ
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আজ পিবিসির চেয়ার ও ভাইস-চেয়ারদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
পিসবিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের একটি
আন্ত:রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সংস্থা। এই সংস্থা সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি
বিনির্মাণের জন্য কাজ করে, যাতে সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই
উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।
কোভিড-১৯ অতিমারি শান্তি বিনির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ওপর মারাত্মক প্রভাব
ফেলছে ঠিক তেমনই এক চ্যালেঞ্জিং সময়ে পিবিসি পরিচালনার জন্য সদস্যরাষ্ট্রসমূহ
বাংলাদেশের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে বাংলাদেশকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছে,
সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ও শান্তি বিনির্মাণের
ক্ষেত্রে কোভিড অতিমারি যে প্রভাব ফেলেছে তা প্রশমিত করতে আমরা বৈশ্বিক সংহতি এগিয়ে
নিতে বিশেষ মনোযোগ দেব’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে, বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি
ও নিরাপত্তা রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা
কার্যক্রমে অবদান রাখা এবং বিশ্বব্যাপী ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা’কে চ্যাম্পিয়ন
করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক বিশ্বস্ত নাম। এই নির্বাচন বাংলাদেশের
প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসেরই বহি:প্রকাশ, কারণ বিশ্বের অত্যন্ত
ঝুঁকিপূর্ণ কিছু অঞ্চলে শান্তিরক্ষা ও শান্তিবিনির্মাণে বাংলাদেশ দীর্ঘ সময়ব্যাপী
তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শান্তিবিনির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত ও টেকসই অর্থায়ন
নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে পিবিসি সদস্য ও অন্যান্য
অংশীজনের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। জাতীয় পর্যায়ে শান্তি বিনির্মাণ ও
টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থা এবং
আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন
রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানকাল থেকেই পিবিসি’র সদস্য। এর আগে ২০১২ সালে বাংলাদেশ
পিবিসি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করে। সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) থেকে নির্বাচিত সদস্যসহ ৩১ জন সদস্যের সমন্বয়ে
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিবিসি। জাতিসংঘে শীর্ষ অর্থ প্রদানকারী ও শীর্ষ শান্তিরক্ষী
প্রেরণকারী দেশগুলোও কমিশনের সদস্য।