গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর গবেষণা পরিচালক ডক্টর সাইমা হক বিদিশা বলেছেন, দেশে চলমান ডলার সংকট নিরসনে নতুন করে ঘোষিত আড়াই শতাংশ প্রণোদনার সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর করতে ডলার রেট পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। তা না হলে ডলার অবৈধ চ্যানেলে লেনদেনের পথটা শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি বাজারের নজরদারি বাড়াতে হবে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকে দেশের আর্থিক সংকট নিরসনে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে অংশ নিয়ে এ কথা জানিয়েছেন সানেম এর গবেষণা পরিচালক সাইমা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্ব আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ-সচিব খাইরুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও প্রধান অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা।
সাইমা হক বিদিশা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি এবং রাজস্ব নীতি পরিবর্তন ছাড়াও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ আমাদের দেশে মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এই জায়গাগুলোতে আলাদাভাবে কাজ করার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ব্যাংকের পক্ষ থেকে রেমিটেন্স কেনার ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদে এটা কাজে আসবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ডলারের অফিশিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল রেটে পার্থক্য কমবে না ততক্ষণ রেমিটাররা অবৈধ পথেই ডলার পাঠাবেন। এছাড়াও একটা শ্রেণি রয়েছে যারা হুন্ডির মাধ্যমে ব্যবসা করে। এই চ্যানেলটা বন্ধ করার জন্য শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় ততক্ষণ ফরেন কারেন্সিতে একটা আশঙ্কা থেকেই যাবে। এছাড়াও খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ সহ আর্থিক খাতের সুশাসন ফেরাতে না পারলে নীতি পরিবর্তনের সুফল যথাযথভাবে আমরা পাবো না।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে একই বিষয়ে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেদিন নতুন করে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। কেননা এ ধরণের প্রবণতা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে।