ঢাকা, ১ মাঘ (১৫ জানুয়ারি):

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, বিশ্বায়নের এ যুগে হাজার বছরের
ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার অন্যতম প্রধান উপাদান হতে
পারে চলচ্চিত্র। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন ও এতে অংশগ্রহণের
মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিদেশি সংস্কৃতির
ভালো উপাদানসমূহ গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে আরো ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ করার সুযোগ
রয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ধারার সঙ্গে দেশের তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল নির্মাতাদের
সংযোগ স্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করে এসব চলচ্চিত্র উৎসব।

প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে রেইনবো চলচ্চিত্র
সংসদ আয়োজিত নয় দিনব্যাপী (১৫-২৩ জানুয়ারি) তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-
২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথি হিসাবে
উপস্থিত থেকে উৎসব উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
প্রধান অতিথি বলেন, আমি শুরু থেকেই ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের একজন
একনিষ্ঠ ভক্ত। তিনি বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ এ উৎসব আয়োজন করে
আসছে। সেজন্য তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রেইনবো
চলচ্চিত্র সংসদ ১৯৭৭ সাল থেকে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট থেকে সুস্থ
ধারার চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে সংস্কৃতি বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। এদেশের
চলচ্চিত্র আন্দোলনে এ সংসদের অবদান অনস্বীকার্য।

বিশেষ অতিথি বলেন, চলচ্চিত্র একটি সমাজের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রাক্তন
সোভিয়েত ইউনিয়নের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। সেই সময় চলচ্চিত্রকেই তারা রাজনৈতিক
আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন এবং সার্থক হয়েছিলেন। সংস্কৃতি
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবরের মতো এবারও ঢাকা আন্তর্জাতিক
চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে। তিনি বলেন, আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার
পাশাপাশি এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার মিলনায়তনসমূহ এ উৎসবের
প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

২০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২২ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক পররাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা
করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। স্বাগত বক্তৃতা করেন
উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল।

নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ স্লোগানে আয়োজিত ২০তম ঢাকা
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২২ -এ বাংলাদেশসহ ৭০টি দেশের ২২৫টি চলচ্চিত্র

প্রদর্শিত হবে যার মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য ১২৯টি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্রের সংখ্যা
৯৬টি। এর মধ্যে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র রয়েছে ৪০টি যার মধ্যে ২২টি স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং ১৮টি
পূর্ণদৈর্ঘ্য।

উল্লেখ্য, এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল,
ট্রিবিউট, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, শিশুতোষ চলচ্চিত্র, উইমেন্স
ফিল্মমেকার, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র এবং আধ্যাত্মিক চলচ্চিত্র- এই ১০টি বিভাগের
অধীনে চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে।