বায়তুল ইজ্জত, চট্টগ্রাম, ২ শ্রাবণ (১৭ জুলাই) :
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী
কুচকাওয়াজ আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবি’র
প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি) এর বীর
উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবি’র নবীন সদস্যদের প্রশিক্ষণ সমাপনী
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের
বিজিবি’র নবীন সদস্যদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ও বিজিবি’র
মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ৩১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে শুরু
হয়। বিজিটিসিএন্ডসিতে প্রশিক্ষণ নেয়া মোট ৭৮৪ জন রিক্রুট এর মধ্যে ৬৫৬ জন পুরুষ এবং
১২৮ জন নারী রিক্রুট প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে।
৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ শেষে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিবি’র নবীন সদস্যদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার হাতে গড়া এই বাহিনী আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার
দেশপ্রেমিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দেশের ৪ হাজার
৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্তে চোরাচালানরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধসহ
যেকোনো ধরনের সীমান্ত অপরাধ দমন সর্বোপরি দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষার মহান
দায়িত্ব অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সাথে পালন করে আসছে। এছাড়াও দেশের অভ্যন্তরীণ
নিরাপত্তা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানসহ যেকোন দুর্যোগ মোকাবিলার
ক্ষেত্রেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিশ্বস্ততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিডিআর-এর ৩য় ব্যাচের সমাপনী
কুচকাওয়াজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চোরাচালান বিরোধী ও প্রেরণামূলক
মূল্যবান বক্তব্যের কথা স্মরণ করে চোরাচালান রোধে বিজিবি’র নবীন সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা
অর্জনসহ ব্যক্তিগতভাবে সুদৃঢ়, সুশৃঙ্খল, নির্লোভ ও নির্ভীক সর্বোপরি উন্নত চরিত্রের
অধিকারী হওয়ার উপদেশ দেন।
বিজিবি’র সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা
উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজিবিকে একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন
সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিজিবি’র সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে বিজিবিকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে
উন্নীত করা হয়েছে। স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্ট এর অংশ হিসেবে সীমান্তে নতুন বিওপি, বিএসপি
নির্মাণসহ অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন, এটিভি ও অত্যাধুনিক এপিসি, রায়ট
কন্ট্রোল ভেহিক্যাল, ভেহিক্যাল স্ক্যানার ও দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়াও
অতি সম্প্রতি এই বাহিনীতে অত্যাধুনিক এন্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন সংযোজন করা হয়েছে।
বিজিবি’র প্রশিক্ষণ কর্মকান্ডের কলেবর বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চুয়াডাঙ্গায় আরেকটি
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে ৯৬তম
রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকারী বক্ষ নম্বর ৪০২ রিক্রুট (জিডি)
নয়ন এবং অন্যান্য বিষয়ে সেরা জওয়ানদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।