ঢাকা, ২১ জ্যৈষ্ঠ (৪ জুন) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২’
উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“পরিবেশ সংরক্ষণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায়
বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২’ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
প্রকৃতি ও পরিবেশ থেকে নানা উপাদান গ্রহণ করেই আমরা বেঁচে থাকি। কাজেই
প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে পৃথিবী তথা আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
পৃথিবীতে মানবজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমাদেরকে প্রকৃতি ও পরিবেশের
সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। প্রকৃতির অক্ষুন্নতা বজায় রাখাকে গুরুত্ব দিয়ে এ
বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ও স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘Only One
Earth: Living Sustainably in Harmony with Nature’ যার ভাবার্থ ‘একটাই পৃথিবী:
প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন’ অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
স্লোগানটি প্রকৃতি ও পরিবেশকে সংরক্ষিত রাখার পাশাপাশি ধরিত্রীকে টিকিয়ে রাখার
লক্ষ্যে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বার্তা বহন করে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন আমাদের এই বাংলাদেশ। ভৌগোলিক
অবস্থান, নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া, পাহাড়-অরণ্য, নদ-নদী, বিপুল উপকূলীয় প্যারাবন
এবং বঙ্গোপসাগর মিলে আমরা পেয়েছি প্রকৃতির এক অনন্য লীলাভূমি। এদেশের মানুষ
অনাদিকাল থেকে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান আহরণের মাধ্যমে জীবনযাত্রা নির্বাহ
করছে এবং প্রথাগতভাবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করছে। সরকার
জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশগুলোকে সংরক্ষিত এলাকা ও প্রতিবেশগত
সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণাপূর্বক সেগুলোর প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য
ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। সকল উন্নয়ন
পরিকল্লপনা প্রণয়নের সময় প্রকৃতি এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া
হচ্ছে। যেকোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের সময় প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য যাতে
বিনষ্ট না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া আবশ্যক। কারণ, প্রকৃতি বাঁচলে আমরা
বাঁচব। প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হলে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা
সৃষ্টি হবে; অপরদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হবে। এ
বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃতি, পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের মাধ্যমে
ধরিত্রীকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমি সকলকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
আসুন, সুখী-সুন্দর সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রকৃতি, পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য
সংরক্ষণে আমরা সবাই একযোগে কাজ করি এবং বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য
প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবনের নিশ্চয়তা বিধান করি।
‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২’ উদযাপন সফল হোক – এ কামনা করি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”