লেখকঃ মোঃ হায়দার আলী: কৃষকের ইরি বোরা ধান চাষ করে ধান উৎপাদন করতে সেচ, সার, বীজ, কীটনাশক, নিড়ানী, কৃষি শ্রমিক ইত্যাদিতে কি পরিমান ব্যয় এবং বর্তমানে ধানের বাজার মূল্যেতে কি কৃষক লাভবান হবেন না ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধান চাষে অগ্রহ হারাবেন না ধান চাষে আগ্রহ ফিরে পাবেন এ সম্পর্কে লিখার জন্য, তথ্য উপাত্ত নিয়ে ল্যাপটপ ওপেন করলাম
এমন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দেখলাম বছরের পর বছর ঘুরে বেসরকারী স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীগণ অবসর কল্যাণের টাকা না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসছেন। ৪০ হাজার শিক্ষক কর্মচারী অর্থাভাবে দারুন কষ্টে আছেন অনেকে , স্কুল ও শিক্ষক সমিতি থেকে যে অর্থ দিয়েছে তা দিয়ে এতদিন চললাম। এখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন অনেকে। মানুষের নিকট হাত পাততে হচ্ছে, বেঁচে থাকা অবস্থায় কী স্যার আমি অবসর কল্যানের টাকা পাব। নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের। অনেকের অনুরোধে আজকের কলামটি আল্লাহর নাম লিখা শুরু করলাম। নিজে প্রধান শিক্ষক হিসেবে লিখার নিজকে খুব কষ্ট লাগছিল। শিক্ষক কর্মচারীদের ১০ ভাগ কর্তনকৃত টাকা গুলি যদি অবসর গ্রহনের পরপরই পেতেন তবে এসমস্যা থাকতো না। কিন্তু এসব টাকা যায় কোথায় বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় কেন? শিক্ষক কর্মচারীগণ জানতে চাই।
২৯ জানুয়ারি ২০২৫, একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জমানো ৬ হাজার কোটি টাকা যে ব্যাংকে রাখা হয়েছিল সেটি দেউলিয়া হওয়ায় তাদের সঞ্চয়ের কোনো টাকাই এখন আর নেই। শিক্ষকদের কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকটিতে রাখা হয়েছিল। পরস্পর যোগসাজশে এটি করা হয়। এই (৬ হাজার কোটি) টাকা কম নয়। এই অর্থ হলে আমরা শিক্ষকদের পেনশনসহ সব দায়দেনা মেটাতে পারতাম বলেন । অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর (বিবিএস) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব কথা বলেন।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানেরর
সভাপতিত্বে করেন শিক্ষা উপদেষ্টা আরও ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ভালো কথা হলো রেমিট্যান্স বাড়ছে। এই রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি আশা জাগাচ্ছে। রেমিট্যান্সের অর্থ গ্রামে যাচ্ছে। ফলে সেখানে সেবা খাত চাঙা হচ্ছে।
অর্থসংকটের কারণে আগে থেকেই বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ–সুবিধার টাকা পেতে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হতো। এখন এই অর্থের সংকট আরও বেড়েছে। পাশাপাশি প্রায় ছয় মাস ধরে অবসর ও কল্যাণ–সুবিধা বোর্ড অকার্যকর হয়ে আছে। এই দুই কারণে এখন শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ–সুবিধা পেতে অপেক্ষাও দীর্ঘ হচ্ছে। অবসর ও কল্যাণ–সুবিধা মিলিয়ে ৭৪ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর আবেদন অনিষ্পন্ন হয়ে জমা পড়ে আছে।
অবসরের পরপরই অবসর ও কল্যাণ–সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবতা হলো শিক্ষক-কর্মচারীদের এসব সুবিধা পেতে এখন তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। প্রায় ছয় মাস ধরে বোর্ড সভা না হওয়ায় এবং বোর্ডের নিয়মিত সচিব না থাকায় নতুন করে টাকা দেওয়ার অনুমোদন হচ্ছে না। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের হাহাকারও বাড়ছে।
এখন শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ–সুবিধা পেতে অপেক্ষাও দীর্ঘ হচ্ছে। অবসর ও কল্যাণ–সুবিধা মিলিয়ে ৭৪ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর আবেদন অনিষ্পন্ন হয়ে জমা পড়ে আছে।
অবসর–সুবিধা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের আবেদনগুলোর মধ্যে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত জমা আবেদনগুলোর বিপরীতে টাকা দেওয়ার অনুমোদন করা হয়েছে। কলেজে তা ওই বছরের মার্চ পর্যন্ত এবং মাদ্রাসার জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জমা আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে কল্যাণ ট্রাস্টের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০২২ সালের মে পর্যন্ত জমা পড়ে থাকা আবেদনগুলোর বিপরীতে টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সেখানকার একটি সূত্র জানিয়েছে, অনুমোদনের পরও কখনো কখনো টাকা পেতে কিছু সময় লেগে যায়।
এদিকে ২০০২ সালের ২৭ নং আইনের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড গঠন হয়। এ আইনের (বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা আইন, ২০০২) ধারা ১৫ তে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে প্রণীত প্রবিধান-২০০৫ অনুযায়ী ‘‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা’’ চালু হয়।
প্রবিধানমালা-২০০৫ এর উপ-প্রবিধান-১০(১) অনুযায়ী এমপিওভূক্ত অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসরকালীন সময়ের সুবিধা প্রদান করা হয়। বর্তমানে ব্যানবেইস ভবন, ১ এশিয়ান হাইওয়ে, পলাশী-নীলক্ষেত, ঢাকার নীচতলায় ৫টি কক্ষ নিয়ে এর কর্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এর অধীন এমপিওভূক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর সুবিধা প্রদান কার্যক্রম এই বোর্ডের আওতাভূক্ত। এই প্রতিষ্ঠানে অধিভূক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের কাছ থেকে ৪% চাঁদা কর্তন করে অবসর সুবিধাদি প্রদান করা হয়ে থাকে।
দুঃখজনক হলেও বাস্তব সত্য বর্তমানে ১০% কর্তন অব্যাহতভাকে চলছে। কিন্তু শিক্ষক কর্মচারীদের তেমন কোন উপকারে আসছেনা বলেই শিক্ষক নেতাসহ ভুক্তভোগি শিক্ষক কর্মচারী অতিরিক্ত ৪ ভাগ কর্তন বন্ধের।
১৯৯০ সালের ২৮ নং আইনে এবং ১৯৯৯ ইং সালের প্রবিধানমালায় কল্যাণ ট্রাস্ট এবং ২০০২ সালের ২৭ নং আইনে ও ২০০৫ সালেন প্রবিধানমালায় অবসর সুবিধা বোর্ড গঠন করা হয়। এই দুটি সংস্থার আর্থিক যোগান দাতা শিক্ষক কর্মচারী গণের মাসিক চাঁদা এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান যাহার মাধ্যমে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকগনকে অবসর ও কল্যাণ সুবিধা প্রদান করা হবে এবং এই চাদার পরিমান (২% + ৪%) = ৬%। দীর্ঘ দিন ধরে তাই চলে আসল। কিন্তু হঠাৎ কি এমন অসুবিধা হলো যে শিক্ষক কর্মচারীদের ১০% কর্তন করতে হবে। সরকারী কর্মচারী গন কি তাদের পেনশন নিতে কোন কর্তন করেন না সরকারকে কোন টাকা দেন। বরং তাদের জি এফ ফান্ড এ তারা যে টাকা রাখেন, সেখানে সরকার ১২% সুদ দেন।
আমরা দীর্ঘ ১২/১৪ বছর থেকে দেখে আসছি, আমাদের পাওয়ার মধ্যে শুধুমাত্র ইনক্রিমেন্ট দিয়েছে, নাম মাত্র বাড়ী ভাড়া ও নাম মাত্র চিকিৎসা ভাতা। কেন এই বৈষম্য? এর অবসান হওয়া দরকার।
এক্ষেত্রে শিক্ষকদের মতামত, যারা বিভিন্ন দলে/উপদলে বিভক্ত হয়ে অনেক সংসঠন দাড় করিয়েছেন, তাদের কাছে, আশা করি অনুধাবন করবেন এবং সকলে এক সাথে হয়ে এক প্লাটফর্ম এ এসে যুগপৎ কর্মসুচী দিবেন।
অবসর ও সুবিধা বোর্ডের জন্যঃ
১. যদি বাংলাদেশের কোন সরকারী, বেসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, আধা সরকারী কোন সংস্থাই অবসর কালীন সুবিধার জন্য চাঁদা না দেয়, তাহলে আমরা দিব কেন? অতএব আমরা কোন চাঁদা দিব না। যেহেতু রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষন করা, এবং শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার, সেহেতু এর দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হতে হবে।
কোন কর্তন নয়, প্রতিবছর বাজেটে ই আই আই এম সেল হতে তথ্য নিয়ে কত টাকা লাগতে পারে, সেই অনুযায়ী থোক বরাদ্দ থাকবে।
২. ই আই আই এম সেল হতে যেহেতু ৬০ বছর পূর্ণ হলে, আপনা আপনি একজন শিক্ষকের নাম কর্তন হয়ে যায়, সেহেতু ই আই আই এম সেল, জুলাই টু জুন হিসেব করে সরকারকে জানাবে এত জন শিক্ষক এই অর্থ বছরে অবসরে যাবেন, এবং তাদের জন্য এই পরিমান টাকা লাগবে।
৩. সফট ওয়ার আপডেট করে, অনলাইনে শিক্ষকগন তাদের তথ্য পূরণ করবেন, বর্তমানে যে ভাবে বৃত্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে, সেভাবেই তথ্য দিয়ে একজন শিক্ষক বাসায় বসে থেকে তার হিসেব নম্বরে টাকা পাবেন। অতএব, অবসর গ্রহন করার পর, এক গাদা কাগজ পাঠানো এবং তারপর বছরের বছরের পর অপেক্ষা কেন?
৪. একজন শিক্ষক যখন চাকুরি করেন, তিনি মিনিস্টারি অডিট এর মুখোমুখি হন। তিনি দীর্ঘদিন একই পদে চাকুরি করে আবার তাকে যাচাই করতে হবে, তিনি চাকুরি করেছেন, কোথায় কোথায় করেছেন, এ কেমন হয়রানি। এটার আদ্যে দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।
৫. অটোমেশন পদ্ধতি অনুসরন করতে হবে। এখানে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ নামের এই দুটি অফিসের আর কোন দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।
৬. এ পর্যন্ত যারা কল্যান ও অবসরে বোর্ডে চাঁদা দিয়েছেন, তাদের টাকা সুদ সহ ফেরত দিতে হবে।
এখন আসি অন্যান্য দাবী নিয়েঃ
১. বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন পিয়ন থেকে শুরু করে উচু স্তরের একজন (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক, প্রধানশিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহাকরী শিক্ষক, অফিস সহকারী) সকলের বাড়ী ভাড়া ১০০০/= টাকা। এই বাড়ী ভাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সরকার যদি এখন ৪৫% বাড়ী ভাড়া দিতে না পারে, তাহলে তিন অর্থবছরে ( অর্থাৎ প্রথম অর্থবছরে ২০%, পরের অর্থ বছরে ১৫%, এবং তারপরের অর্থ বছরে ১০% ) দিয়ে সমম্নয় করতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার বা রাষ্টের সদইচ্ছা থাকতে হবে। মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে এর বিকল্প ভাবা আর অন্ধকারে বাস করা একই কথা বা অলীক স্বপ্ন দেখা। এটা কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে, আমার জানা নেই। এর আশু সমাধান জরুরী। এই ব্যাপারে আমাদের আর এখন চুপ থাকা যাবে না। শিক্ষক সমিতির নেতারা দীর্ঘদিন ধরে অনেক সভা, মিটিং, স্বারকলিপি দিয়েছে, তার কোন কাজ হয়নি।
২. সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগন ১৫০০/= চিকিৎসা ভাতা পান, বেসরকারী শিক্ষকগন ৫০০/= টাকা পান। এটা একটি স্বাধীনদেশে কি করে সম্ভব। অতএব বেসরকারী শিক্ষকগন ও ১৫০০/= টাকা চিকিৎসা ভাতা পাবেন।
৩.সরকারী শিক্ষকগণ যে ভাবে বা যে ফিকসেশনে উচ্চতর গ্রেড পাবেন, বেসরকারী শিক্ষকগণ ও একই ফিকছেশনে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্ত হবেন। এখানে কোন আইন বা নীতিমালার দরকার নেই। নীতিমালা হবে, সরকারীরাও যে ভাবে পাবেন, বেসরকারীরাও সেভাবে পাবেন। দুই রকম নীতিমালা হলে, আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৎ সন্তান। আমাদের কোন মুল্যায়ন নেই।
৪. সরকারী হাই স্কুল তথা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী গন যে ভাবে তিন বছর (৩) পর পর রিক্রিয়েশন ভাতা বা শ্রান্তিবিনোদন ভাতা পান, আমাদের ও সেভাবে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা প্রদান করতে হবে।
৫. সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগনের মত শতভাগ বোনাস দিতে হবে। এই করোনা ক্রান্তিকালে, কার কাছে যাবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে বোর্ড সদস্যদের সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল উক্ত সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করা হয়। নতুন স্কেলে কল্যাণ সুবিধা প্রদান : বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ২০০৯ সালে পদ ও নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী কল্যাণ সুবিধা প্রদান নতুন পে-স্কেলে সরকার থেকে শুধু বেতনের টাকা প্রদান করা হয়েছে। কল্যাণ সুবিধা বা অবসরের জন্য কোন টাকা দেওয়া হয়নি। কল্যাণ ট্রাস্টের নিজস্ব তহবিল থেকে কল্যাণ সুবিধার টাকা প্রদান করা হচ্ছে। ফলে ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরের নতুন স্কেলে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের কল্যাণ সুবিধার দাবি মেটাতে কল্যাণ ট্রাস্টের নিজস্ব ফান্ড থেকে অতিরিক্ত প্রায় ৬০ (ষাট) কোটি টাকা প্রদান করতে হচ্ছে। কল্যাণ ট্রাস্টকে ডিজিটালে উন্নীত করা : অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের কল্যাণ সুবিধার টাকা সহজে পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় এক্সেস টু ইনফরমেশন (A2I) প্রজেক্টের মাধ্যমে কল্যাণ ট্রাস্টকে ডিজিটালাইজড করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ Online পদ্ধতি ব্যবহার করে দেশের প্রত্যন- অঞ্চল থেকে কম্পিউটারের মাধ্যমে আবেদন করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে তাদের বাড়িতে বসেই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য টাকা পেয়ে যাবেন। কল্যাণ ট্রাস্টে অতীতে অনিয়ম, ঘুষ, দূর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ ছিল। যেমন একজনের টাকা অন্যজন নিয়ে যাওয়া, একই ব্যক্তি একাধিকবার চেক গ্রহণ, আবেদনপত্রের সিরিয়াল অনুসরণ না করা প্রভৃতি। বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড দায়িত্ব গ্রহণের পর এইসব অনিয়ম, ঘুষ, দূর্নীতি কঠোর হসে- দমন করা হয়েছে। এখন “আগে আসলে আগে পাবেন” ভিত্তিতে আবেদনের ক্রমানুসারে কল্যাণ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। এখানে অনিয়মের কোন চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে অবসর + কল্যাণ (৭৫ + ২৫) = ১০০ মাসই আছে, কমে নাই সম্প্রতি অনেকেই বেসরকারি এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সংক্রান্ত একটি পুরোনো প্রজ্ঞাপন শেয়ার করে যে যার মত মনগড়া ব্যাখ্যা করছেন। কেউ কেউ বলছেন অবসর সুবিধা নাকি ৭৫ মাস থেকে কমে ৫০ মাস করা হয়েছে।
আমার জানা মতে বিষয়টি নিম্নরূপ :
২৫ বছর চাকরি করলে এবং চাঁদা দিলে একজন শিক্ষক পূর্ণ অবসর সুবিধা পাবেন। কিন্তু একজন শিক্ষক যদি ৩০ বছর চাকরি করেন এবং চাঁদা দেন তিনিও কি সমান সুবিধা পাবেন না বেশি পাবেন?
এই সমস্যা সমাধান কল্পে ২০০১ সাল হতে চাকরি কাল গণনা করা শুরু হয় কিন্তু তা পরবর্তীতে কার্যকর করা হয় ২০০৫ সাল থেকে। তাই ২০০৫ সালের পর হতে যারা অবসরে যাবেন তাদের ক্ষেত্রে :
ধরুন একজন শিক্ষক ২৫ বছর চাকরি করার পর ২০৩০ সালে অবসরে যাবেন। তার ক্ষেত্রে ২৫ বছরের জন্য ৫০ মাস + চাকুরি কাল ( ২০৩০ – ২০০৫ ) = ২৫ মাসের সুবিধা + ২৫ ( কল্যাণ) । অর্থাৎ ৫০+২৫+২৫= মোট ১০০ মাসের সুবিধা।
এবার ধরুন ৩০ বছর চাকরির পর ২০৩৫ সালে অবসরে যাবেন, এক্ষেত্রে :
২৫ বছরের জন্য ৫০ মাস + চাকরি কাল ( ২০৩৫ – ২০০৫ ) = ৩০ মাসের সুবিধা +২৫ ( কল্যাণ)। অর্থাৎ ৫০+৩০+৩০= ১১০ মাসের সুবিধা।
আবার কেউ ২৫ বছর চাকরি করে ২০২০ সালে অবসরে গেলে তার ক্ষেত্রে : ২৫ বছরের জন্য ৫০ মাস + ( ২০২০-২০০৫) = ১৫ মাস + ২৫ ( কল্যাণ) = মোট ৫০+১৫+২৫ = মোট ৯০ মাসের সুবিধা পাবেন।
আবার ২৫ বছরের চেয়ে ১ মাস কম হলে এবং ২০৩০ সালে অবসরে গেলে : ২৪ বছরের জন্য ৪৫ মাস + চাকরি কাল ২৪ মাস+ কল্যাণ ২৪ মাস = মোট ৯৩ মাসের সুবিধা পাবেন।
এবার নিচের সূত্র অনুযায়ী নিজের হিসাব করে নেন।
সূত্র : প্রাপ্যতা ( ছক অনুসারে ) + চাকুরি কাল ( ২০০৫ এর পর হইতে অবসর পর্যন্ত যত বছর ) + কল্যাণ ( যত বছর চাকরি তত মাস )
কল্যাণ ট্রাস্টের হিসাব : চাকরি কাল যত বছর তত মাসের সুবিধা ( যেমন ২৫ বছর করলে ২৫ মাস, ৩০ বছর করলে ৩০ মাস আর কম হলে কম)
* চাঁদা কর্তনের পর = এমপিও হতে চাঁদা কর্তন বুঝায়।
* কার্যকর চাকরি কাল = অবসরে যাওয়ার সাল – ২০০৫ সাল। ২০০৬ সালের আগে যোগদান করলে সেটা গণনা করা হবেনা। ২০০৬ সাল হতে ( NTRCA) এর নিবন্ধন ধারীদের নিয়োগ শুরু হয়। তাদের ক্ষেত্রে আর অবসরে যাওয়ার সাল হতে ২০০৫ সাল বিয়োগ করতে হবেনা। ইতিমধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা অনুদান এবং ৫০০ কোটি টাকা এনডাওমেন্ট ফান্ড হিসেবে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৫০ কোটি টাকা এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৩২ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে মন্ত্রণালয় থেকে প্রদান করা হয়েছে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত করা সকল আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
নোবেলজয়ী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিকট শিক্ষক কর্মচারীদের প্রাণের দাবী অবসর গ্রহনের ২।৩ মাসের মধ্যে কিংবা বা দ্রুততম সময়ের তারা অবসর ও কল্যাণের টাকা গুলি যেন তার নিজস্ব ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে গ্রহন করতে পারেন তার সুব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
মোঃ হায়দার আলী
প্রধান শিক্ষক,
মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়,
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
ও
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি
গোদাগাড়ী উপজেলা শাখা