ইসরায়েলের ‘ভুল করে’ হত্যা করা তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে যখন গুলি করা হয়, তখন তাদের হাতে শান্তির প্রতীক সাদা পতাকা ছিল। প্রাথমিক তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন এক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা।
তিনি বলেছেন, ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, সেখানে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছিল। ওই এলাকায় হামাস সদস্যরা বেসামরিক নাগরিকের ছদ্মবেশ ধারণ এবং নানা ধরনের ‘প্রতারণামূলক কৌশল’ অবলম্বন করে থাকে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
ঘটনার বর্ণনায় ওই কর্মকর্তা বলেন, এক ইসরায়েলি সেনা তাদের কাছ থেকে কয়েক মিটার দূরে জিম্মিদের উঠে আসতে দেখেন। তারা সবাই খালি গায়ে এবং সাদা কাপড় বাঁধা একটি কাঠি হাতে ছিল।
তাদের দেখে ওই সেনা হুমকি বোধ করেন এবং গুলি চালান। তিনি তাদের (জিম্মি) সন্ত্রাসী ঘোষণা করেন এবং তখন বাকিরাও (বাহিনী) গুলি চালায়। সঙ্গে সঙ্গে দুজন নিহত হন।
তৃতীয় জিম্মি আহত হয়ে নিকটবর্তী একটি ভবনে ফিরে যান এবং সেখান থেকে হিব্রু ভাষায় সাহায্যের অনুরোধ জানান। ব্যাটালিয়ন কমান্ডার তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির আদেশ দেন। কিন্তু তৃতীয় ওই ব্যক্তির দিকে আরেক দফা গুলি চালানো হলে তিনিও মারা যান।
ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, এটি আমাদের নিয়মের বিরুদ্ধে।
এর আগে, শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) গাজায় অভিযান চালানোর সময় তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে হত্যা করে ইসরায়েল। এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিহতদের পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা বলেছে, এই ঘটনা ‘সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে’ তদন্ত করা হবে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, শুজাইয়া এলাকায় যুদ্ধের সময় সেনারা ভুল করে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ফলস্বরূপ, সেনারা তাদের দিকে গুলি চালায় এবং তারা নিহত হন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে, ওই তিনজন হয় তাদের অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল অথবা তাদের ফেলে যাওয়া হয়েছিল।
এদিকে, ‘ভুল করে’ তিন জিম্মিকে হত্যার খবর প্রকাশের পরপরই তেল আবিবে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বাকি জিম্মিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যরা।